বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল হাসপাতালে তাণ্ডব, বাস ভাঙচুর-আগুন
৪ আগস্ট ২০২৪ ১২:৩৬
ঢাকা: সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনের অংশ হিসেবে শাহবাগে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের একটি অংশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
রোববার বেলা ১১টার দিকে আন্দোলনকারীরা শাহবাগে জড়ো হওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে আন্দোলনকারীদের একটি অংশ লাঠিসোঁটা হাতে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালের দিকে ঢুকে পড়ে।
এসময় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বেশ কিছু বাসে ভাঙচুর করা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল।
একপর্যায়ে হামলাকারীরা একটি ভবনে ঢোকার চেষ্টা করলে ভেতর থেকে হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষী ও কর্মচারীরা প্রতিরোধ গড়েন।
আন্দোলনের কারণে রোববার (৪ আগস্ট) সকাল থেকেই উত্তপ্ত ছিল রাজধানীর এলাকাগুলো। বেলা ১১টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয় কাটাবন এলাকায়। যেখানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় বিরোধীপক্ষ। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। কাটাবন থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীর শাহবাগ, সায়েন্সল্যাব ও বাটা সিগন্যাল এলাকায়।
এর আগে, সকালে শাহবাগ এলাকা দিয়ে দু–তিনজন করে বিক্ষোভকারী যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা তাদের মারধর করেন। পরে বিক্ষোভকারীরা সংগঠিত হয়ে আসেন।
এ সময় শাহবাগ থানা এলাকায় একটি পুলিশের গাড়িকে বিক্ষোভকারীদের আসতে দেখে সরে যেতে দেখা যায়।
শাহবাগে অবস্থানকারীরা ‘দফা এক দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ’, ‘অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে,’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এদিকে, সকাল থেকেই এক দফা দাবিতে অসহযোগ আন্দোলনে যাত্রাবাড়ী এলাকায় আন্দোলনকারী ছাত্ররা ধীরে ধীরে জড়ো হন। পুলিশও আন্দোলনকারীদের বিপরীতে প্রস্তুতি নিতে দেখা যায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে শোনা যায়।
অসহযোগ আন্দোলনের পাশাপাশি আজ রাজধানীসহ সারাদেশের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
কেন্দ্রীয়ভাবে শাহবাগে বেলা ১১টা থেকে বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ আয়োজনের কথা জানান আন্দোলনের সমন্বয়করা। এছাড়া রাজধানীতে সায়েন্সল্যাব, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, টেকনিক্যাল, মিরপুর ১০, রামপুরা, তেজগাঁও, ফার্মগেট, পান্থপথ, যাত্রাবাড়ী ও উত্তরায় বিক্ষোভ ও গণসমাবেশ আয়োজনের কথা ছিল।
কর্মসূচি সফল করতে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী, পেশাজীবী, রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক নির্বিশেষে আপামর জনসাধারণকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানানো হয়।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে সারাদেশে অনির্দিষ্টকালের অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
সারাবাংলা/ইউজে/একে