Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোটা সংস্কার আন্দোলন: ঢাকাজুড়ে সহিংসতায় নিহত বেড়ে ১০

স্টাফ করেসপন্ডন্ট
৫ আগস্ট ২০২৪ ০০:০৫

ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে পালন হওয়া অসহযোগ আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগসহ সরকারদলীয় বিভিন্ন সংগঠন ও পুলিশের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে। এতে রাত পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এসব সংঘর্ষে আহত ২৪০ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ জনকে ভর্তি দেওয়া হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন— আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি (২২), আনোয়ারুল ইসলাম, তাহিদুল ইসলাম (২২), রমিজ উদ্দিন রুপ (২৪), সেলিম (৪০) ও ভ্যানচালক রিয়াজউদ্দৌলা (৩৬)। বাকি চারজনের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি।

নিহতদের মধ্যে হাবিবুল্লাহ বাহার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সিদ্দিকি (২২) রোববার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে জিগাতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। বিকেল ৪টার দিকে ঢামেক হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে উত্তরায় বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার সময় নিহত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ারুল ইসলাম। ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।

রোববার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তাহিদুল ইসলাম (২২)। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তহিদুলের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলায়। থাকতেন মহাখালী ডিওএইচএস এলাকায়। সেখানে ডি৮ কনসালট্যান্টস লিমিটেডে জুনিয়র অফিস সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় ডান চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী রমিজ উদ্দিন রুপ (২৪)। তিনি দ্বিতীয় বর্ষের পর আর পড়ালেখা করেননি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢামেকে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি হাজারীবাগের রায়েরবাজার এলাকায় থাকতেন।

রোববার সকাল ১১টার দিকে শাহবাগে ইটের আঘাতে আহত হন সেলিম (৪০) নামে এক ব্যক্তি। ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসধীন অবস্থায় বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে মৃত্যু হয় তার। বিকেলে যাত্রাবাড়ী টনি টাওয়ারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ভ্যানচালক রিয়াজউদ্দৌলা (৩৬)। তাকে আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রাত ১০টার দিকে।

এর বাইরে অজ্ঞাত আরও চারজন নিহত হয়েছেন রোববার। সন্ধ্যার দিকে পথচারীরা আনুমানিক ১৮ বছরের এক তরুণকে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জিগাতলা এলাকায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনুমানিক ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে ঢামেক হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আনুমানিক ২২ ও ২৫ বছর বয়সী আরও অজ্ঞাত দুজনকেও নেওয়া হয় ঢামেক হাসপাতালে। চিকিৎসক মৃত্যু নিশ্চিত করলে হাসপাতালে নথিভুক্ত না করেই মরদেহ দুটি নিয়ে আন্দোলনকারীরা শহিদ মিনারের দিকে চলে যান।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ঢামেক হাসপাতালে এ পর্যন্ত ৯ জন মারা গেছেন বা তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি মরদেহ নথিভুক্ত না করেই নিয়ে গেছেন শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া রাত ৯টা পর্যন্ত ২৪০ জন আহত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ঢামেক হাসপাতালে। এর মধ্যে ৬৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।

সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর

কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন টপ নিউজ ঢামেক হাসপাতাল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর