পরিবর্তনের হাওয়া প্রশাসনজুড়ে
৬ আগস্ট ২০২৪ ১৫:১২
ঢাকা: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে গোটা প্রশাসনজুড়ে। গত ১৫ বছরের আওয়ামী লীগের প্রশাসনিক ধারা একরাতেই বদলে গেছে। সচিব থেকে শুরু করে পিয়ন পর্যন্ত একে অপরকে ধরে কোলাকুলি এবং আনন্দ-উল্লাস করছেন।
শেখ হাসিনার পলায়নের পর ভেঙে দেওয়া হয়েছে পুরোনো মন্ত্রিসভা। তাই নতুন সরকারের উপদেষ্টাদের বরণ করে নিতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে প্রস্তুত করা হয়েছে প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র বাংলাদেশ সচিবালয়কে। বিভাজন, ক্ষোভ ও মান-অভিমান ভুলে গিয়ে সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদগ্রীব হয়ে আছেন নতুনদের বরণ করে নিতে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সচিবালয় ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়ছে। সকাল ৯টায় সচিবালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ভবনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবি সম্বলিত বিশাল বিশাল ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। প্রতিটি কক্ষ থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার ছবিগুলো নামিয়ে ফেলা হয়েছে। মন্ত্রীদের নামের প্লেটগুলোও খুলে ফেলা হয়েছে।
সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনের ৮ম তলার পূর্বপাশের সুরম্য কক্ষটিতে বসে নিজের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুরো দেশের রাজনীতি ও প্রশাসন তদারকি করতেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং পতিত সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
গতকালও এ অফিস কক্ষটি ছিল তার পছন্দের ছবি ও নানান ধরনের সোপিসে ঠাসা। আজ সেখানে তার নাম ফলকটিও নেই। সব মন্ত্রণালয়ের দৃশ্য একই ধরনের।
আইন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রশাসন থেকে জগদ্দল পাথর দূর হয়েছে। গত ১৫ বছরের অপশাসনে দেশের কাঠামো ভেঙে পড়েছে। আমরা চাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা দেশের ও জনগণের সেবক, কোনো দলের সেবাদাস নয়। গত ১৫ বছরে প্রশাসনকে ক্রীতদাস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এর ফলাফল পতিত সরকার পেয়েছ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একে অপরকে ধরে কোলাকুলি ঘুরতে দেখা গেছে। অনেকে আনন্দ উল্লাস করতে দেখা যায়।’
চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা টানা চতুর্থবারের মতো একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন।
এর আগে, ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। ৫ বছর পর ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ জন সংসদ সদস্য হন।
একজন কর্মকর্তা জানান, ২০১৮ সালে ‘রাতের ভোট’ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা আবার প্রধানমন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু মেয়াদ পূরণের আগেই মাত্র ৭ মাসের মাথায় পতন হলো এই স্বৈরশাসকের। তাই ‘রাহুমুক্ত’ হওয়ায় আজ প্রশাসনে বইছে আনন্দের হাওয়া।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমও