‘খালেদা জিয়া নোটিশ প্রত্যাহার না করলে আইনি ব্যবস্থা’
২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৭:৩৩
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া খালেদা জিয়ার উকিল নোটিশ প্রত্যাহার না করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিবে হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী এবং দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বুধবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া এবং তার দুই ছেলে তারেক রহমান ও প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর দেশে-বিদেশে একাধিক দুর্নীতির তথ্য উপস্থাপন করা হয়। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়া আইনি নোটিশ দিয়েছে। আমরা আইনিভাবেই বিষয়টি মোকাবিলা করব।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে আমরা বলতে চাই, অবিলম্বে এই আইনি নোটিশ প্রত্যাহার করতে হবে। তা না হলে, এর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উকিল নোটিশ এখনও আমাদের কাছে আসেনি। গণমাধ্যম থেকে আমরা নোটিশের বিষয়টি জেনেছি। নোটিশ পেলে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতি দেশে-বিদেশে ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। দুর্নীতির মামলায় তাদের শুনানি চলছে, ঠিক এই সময়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতেই খালেদা জিয়া আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। তিনি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন।’
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক বলেন, ‘১২টি দেশে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচারের অভিযোগ এসেছে। খালেদা জিয়া নিজে প্রধানমন্ত্রী হয়ে জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। যার অর্থ হচ্ছে যে খালেদা জিয়া যে দুর্নীতি করেছেন তা তিনি স্বীকার করেছেন। তার পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় ব্যাংক থেকে ৯৮০ কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।’
২০০১ সাল পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরে বলেন সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতি ও অর্থপাচারের জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। ইউরোপের কোনো দেশ হলে খালেদা জিয়া দুর্নীতির দায়ে অনেক আগেই রাজনীতি থেকে বহিস্কার হতেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জোট আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পরপর ৫ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার দুই ছেলের মানি লন্ডারিং সিঙ্গাপুরের আদালতে প্রমাণিত। এটি এফবিআই্ এর সাক্ষ্য।’
‘হাওয়া ভবন থেকে সমান্তরাল সরকার চালিয়ে ২ কোটি টাকা লুটপাট করেছিল। বিদ্যুৎ খাতের ২১ হাজার কোটি টাকা গায়েব করেছে। ২০৮ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে তার বার্তা পাঠিয়ে বলা হয়, তারেক রহমান যাতে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারেন। কেননা, তারেক রহমান দুর্নীতিতে ব্যাপক মাত্রায় জড়িত থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথন বলেছিল, বাংলাদেশে যা কিছু খারাপ তার জন্য তারেক ও তার সহযোগীরা দায়ী।’
‘সিমেন্সের কাছ থেকে ঘুষ নেয় তারেক ও তার ভাই কোকো। যা যুক্তরাষ্ট্রের বিচার সম্পদ বাজেয়াপ্তকরণ শাখা ও এফবিআই খতিয়ে দেখছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য চিনের হার্বিন কোম্পানি থেকে তারেক সাড়ে ৭ লাখ ডলার ঘুষ নেয়। ঘুষের অর্থ সিঙ্গাপুরের সিটিব্যাংকে জমা করে।’
‘মোনেম কন্সট্রাকশনকে কাজ পাইয়ে দিতে তারেক সাড়ে ৪ লাখ ডলার ঘুষ নেয়। একটি হত্যা মামলার আসামিকে রক্ষা করতে ২১ কোটি টাকা ঘুষ নেয় তারেক। মা-ছেলে মিলে এতিমের অর্থ মেরে খেয়েছে। পাকিস্তানের আদালতে তথ্য বেরিয়েছে, খালেদা জিয়া পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র কাছ থেকে ১৯৯১ সালে সংসদ নির্বাচনে ৫ কোটি রুপি নেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৭ সালের মে মাসে কানাডার ফেডারেল আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি কানাডার অন্য একটি আদালত বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যা দেয়।’
সারাবাংলা/জেআইএল/একে