স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন, রাজধানীর সড়কে বাড়ছে গণপরিবহণ
৭ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৫১
ঢাকা: টানা চারদিন অস্থিরাবস্থার পর স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। রাজধানীর সড়কগুলোতে বেড়েছে গণপরিবহণ, বাড়ছে লোকসমাগমও। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর থেকে সারাদেশের মতো রাজধানী ঢাকার পরিস্থিতিও ছিল থমথমে। তবে বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকেই অফিসগামী মানুষের ভিড়সহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের চলাচল দেখা গেছে বিভিন্ন সড়কে। খুলতে শুরু করেছে দোকানপাটও। এদিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
অফিস- আদালত খোলা থাকায় সকাল থেকেই সড়কে মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অফিসগামী মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। তবে এখনো ব্যক্তিগত গাড়ি কম চলাচল করছে। কম ছিল পাবলিক বাসের সংখ্যাও। যে কয়েকটি চলতে দেখা গেছে, সেগুলোর চালকরা জানিয়েছেন, ভাঙচুরের ভয়ে হয়তো অনেকে এখনো গাড়ি নিয়ে নামছেন না।
মিরপুর টু কমলাপুর রুটে চলাচলকারী আয়াত পরিবহনের চালক মো. জাফর সারাবাংলাকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক মনে হওয়ায় গাড়ি নিয়ে নেমেছি। যাত্রী সংখ্যাও আজ বেশ ভালো। কারণ মেট্রোরেল না থাকায় বাসে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে।
বনশ্রী রুটের রমজান বাসের হেল্পার জসিম জানান, রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম তাই যাত্রী পাচ্ছি বেশি।
গুলিস্তান রুটের ভিক্টর পরিবহণের যাত্রীরা বলেন, রাস্তা এখনো ফাঁকা তাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছি।
এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেলের সংখ্যাও কম ছিল। তবে রিকশা ও অটোরিকশার উপস্থিতি বেশি দেখা গেছে। অলিগলি থেকে প্রধান সড়ক সব জায়গায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চোখে পড়েছে।
রিকশাচালক মনির বলেন, রাস্তা এখনো ফাঁকা তবে ছিনতাইকারীরা ডিস্টার্ব করে। গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সন্ধ্যার পর এ ধরনের ঘটনা বেশি হচ্ছে।
অটোরিকশা চালক বাদল বলেন, তিনদিন আগে ভোর রাতে হাটখোলা মোড়ে এক অটোরিকশা চালকের গলায় ছুড়ি রেখে পাঁচ হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে গেছে। গলাকাটা অবস্থায় লোকজন ধরে তাকে পাশেই সালাউদ্দীন মেডিকেলে রেখে আসে।
রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালক সুমন বলেন, যাত্রী সংখ্যা একেবারে কম। জ্যাম নেই তাই অনেকেই বাস, রিকশা ব্যবহার করছেন। দেশের পরিস্থিতি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো রাইড শেয়ারিংয়ে ভিড় হবে না।
এদিকে রাজধানীর মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, কাকরাইল, শান্তিনগর সড়কে ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি। কয়েকটি পয়েন্টে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কের দুই পাশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানসহ সব ধরনের দোকানপাট খুলতে দেখা গেছে। খুলেছে বেইলি রোডের শপিং মল। খাবারের দোকান আগে থেকেই খোলা ছিল। তবে সে তুলনায় ক্রেতার সংখ্যা নেই বললেই চলে। দোকান খুলেছে ওয়ারি, মৌচাক এলাকায়ও। তবে ক্রেতা সমাগম নেই।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা দেশ। ১৮ ও ১৯ জুলাই আন্দোলনকে ঘিরে সৃষ্ট সহিংসতায় অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এরপর সরকারবিরোধী আন্দোলন তীব্র হতে থাকে। সেই আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপরেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকে। যা গত দুইদিন ধরে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেআর/ইআ