বাংলাদেশ ব্যাংকের ৬ কর্মকর্তার পর গভর্নরের পদত্যাগ ও বিচার দাবি
৭ আগস্ট ২০২৪ ১৬:১১
ঢাকা: শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের প্রভাব পড়েছে ব্যাংক খাতেও। সরকারের পদত্যাগের পর অফিস খোলার দ্বিতীয় দিনে কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, ডেপুটি গভর্নরসহ ব্যাংকের বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বিক্ষুব্ধ একদল কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, ৪ ডেপুটি গভর্নর, উপদেষ্টা ও আর্থিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধানের পদত্যাগ দাবি করে মিছিল করেন। একপর্যায়ে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল ভবনে অবস্থিত গভর্নরের ফ্লোরে ঢুকে পড়েন এবং একজন ডেপুটি গভর্নরকে সাদা কাগজে সই করতে বাধ্য করেন।
এছাড়াও ৪ ডেপুটি গভর্নর এবং আর্থিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধান বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের দাবির মুখে ‘পদত্যাগ’ করেছেন এবং যারা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, তারা ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছেন। এ সময় সেনাসদস্যরা তাদের নিরাপত্তা দেন। তবে ঘটনার সময় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার কার্যালয়ে ছিলেন না।
বুধবার (৭ আগস্ট) সকাল থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কার্যালয়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা।
বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের পদত্যাগ ও গ্রেফতারের দাবি করেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারকে দেশের ব্যাংক খাতে লুটের অন্যতম সহযোগী অভিহিত করে নানান স্লোগান দিতে থাকেন। তারা আব্দুর রউফ তালুকদারকে গ্রেফতার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবি জানান।
এদিকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর বুধবার অফিস খোলার দ্বিতীয় দিনেও কার্যালয়ে আসেননি গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এরমধ্যেই চার ডেপুটি গভর্নর এবং আর্থিক গোয়েন্দা দফতরের প্রধান বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তাদের দাবির মুখে ‘পদত্যাগ’ করেছেন এবং যারা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন, তারা ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বেরিয়ে গেছেন। এসময় সেনাসদস্যরা তাদের নিরাপত্তা দেন।
ব্যাংক খাতে লুটপাট, দখল, অনৈতিক সুবিধা ও নানা অনিয়মের সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর ও উপদেষ্টাদের বিতাড়িত করেছেন বলে জানান সাধারণ ব্যাংকাররা। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বিল্ডিংয়ের চতুর্থ তলায় কর্মকর্তারা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিয়ে অবস্থান নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমানের কক্ষে ঢুকে তাকে পদত্যাগ করতে চাপ দেন। এসময় ছাইদুর রহমান একটি সাদা কাগজে পদত্যাগের কথা লেখেন এবং স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান।
বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এরপর ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহারের কক্ষে যান। ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার জানান, তিনি কার্যালয় ত্যাগ করছেন। বাকি দুই ডেপুটি গভর্নর মো. খুরশীদ আলম ও মো. হাবিবুর রহমান কার্যালয়ে ছিলেন না। তবে কর্মচারীরা তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করলে তারা জানান, তারা অফিসে আর আসবেন না।
একইভাবে ব্যাংকের উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাসের ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাসুদ বিশ্বাসও জানান, তারা আর ব্যাংকে আসবেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ এসব কর্মকর্তা চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন। আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
সারাবাংলা/জিএস/এমও
৬ কর্মকর্তা আর্থিক গোয়েন্দা দফতর কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর পদত্যাগ-বিচার বাংলাদেশ ব্যাংক