সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ১৩ দফা

ঢাকা: বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলোর দলীয় লেজুড়বৃত্তির কারণে সাংবাদিকতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন গণমাধ্যম কর্মীরা।

তারা বলছেন, বিভক্ত সাংবাদিক ইউনিয়নগুলো দীর্ঘদিন ধরে গণমাধ্যম ও কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থ। এর সুযোগ নিচ্ছে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী। এ কারণে সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাধারণ গণমাধ্যম কর্মীরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। একইসঙ্গে গণমাধ্যমের প্রতি মানুষের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। গণমাধ্যম জাতির কাছে অবিশ্বাসের পাত্রে পরিণত হয়েছে।

‘গণমাধ্যম সংস্কার উদ্যোগ’ নিয়ে শুক্রবার (৯ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতি এসব কথা বলা হয়। গণমাধ্যমের এ বেহাল দশার অবসান জরুরি উল্লেখ করে বিবৃতিতে ১৩ দফা দাবি জানানো হয়েছে।

১৩ দফা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে সাংবাদিক ইউনিয়নগুলোকে আগামী তিন দিন তথা সোমবারের মধ্যে দলীয় লেজুড়বৃত্তি ছেড়ে এক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।

গণমাধ্যম কর্মীদের যে ১৩ দাবি—

• ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত সাংবাদিকদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে;
• ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে আহত গণমাধ্যম কর্মী ও আক্রান্ত গণমাধ্যমকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে;
• গণমাধ্যমের যেসব মালিক ও নির্বাহীরা গণমাধ্যমকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে তৈরি করেছেন, তদন্তসাপেক্ষ তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে;
• গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য অভিন্ন ওয়েজ বোর্ড প্রণয়ন করতে হবে ও অনতিবিলম্বে নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন করতে হবে;
• শ্রম আইন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানে লভ্যাংশ কর্মীদের মধ্যে বণ্টন করতে হবে;
• উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অগণতান্ত্রিক উপায়ে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের দখলদারিত্বের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, অনতিবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে;
• সব স্তরের গণমাধ্যম কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানো বন্ধ করতে হবে;
• গণমাধ্যম পরিচালনার ধরণসহ সার্বিক বিষয়ে সংস্কারের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিশন গঠন করতে হবে;
• গণমাধ্যম ও স্বাধীন মত প্রকাশবিরোধী নিবর্তনমূলক আইনের সব ধারা বাতিল করতে হবে;
• আইসিটি আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি আইনের অধীনে গণমাধ্যম কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে;
• সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সব হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার নিশ্চিত করতে হবে;
• বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের গুম, নির্যাতন ও হয়রানির সঙ্গে জড়িতদের বিচার করতে হবে; এবং
• সব গণমাধ্যম যেন গণমানুষের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে পারে, সে নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।

‘গণমাধ্যম সংস্কারের উদ্যোগে’ ১৩ দফা দাবি তুলে ধরে বিবৃতিটি গণমাধ্যমে পাঠিয়েছেন সাংবাদিক আরিফুল সাজ্জাত ও আহম্মদ ফয়েজ।

সারাবাংলা/এমও

গণমাধ্যম কর্মী গণমাধ্যম সংস্কার সংস্কারের উদ্যোগ