সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে মামলা
৩ জুন ২০১৮ ১৭:৫৭
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: নন্দিত কথাসাহিত্যিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সম্পত্তি আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন তার ছেলে ইরাজ ওয়ালীউল্লাহ। রোববার (৩ জুন) মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদার বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি সিআইডকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে বাবার সম্পত্তি আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরাজ। তিনি সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র একমাত্র ছেলে এবং বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের দ্বৈত নাগরিক।
মামলায় আসামি করা হয়েছে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র মামাত ভাই কামাল জিয়াউল ইসলাম (কে জেড ইসলাম), তার স্ত্রী খাদিজা ইসলাম ও ছেলে রায়হান কামালের বিরুদ্ধে।
বাদী পক্ষে মামলার শুনানি করেন আইনজীবী রানা দাস গুপ্ত ও কাজী নজিব উল্লাহ হিরু।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ মারা যাওয়ার পর তার গুলশানের জমি স্ত্রী আজিজা নাসরিন (আন-মারি ওয়ালীউল্লাহ), ছেলে ইরাজ ওয়ালীউল্লাহ ও মেয়ে সিমিন ওয়ালীউল্লাহ’র নামে নামজারি করা হয়। তারা সবাই প্রবাসে থাকায় ওই সম্পত্তি দেখাশোনার করার দায়িত্ব দেওয়া হয় সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র মামাত ভাই কামাল জিয়াউল ইসলামকে। তাকে এ সম্পর্কিত একটি আম-মোক্তারনামাও দেওয়া হয়।
আমা-মোক্তারনামায় মালিকের স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কথা বলা থাকলেও স্ত্রী ও ছেলের সাথে যোগসাজশে ওই সম্পদ আত্মসাৎ করেন জিয়াউল ইসলাম। নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘নির্মাণ বিল্ডার্স’কে দিয়ে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগও নিয়েছেন তারা।
মামলায় এজহারে আরো বলা হয়, ওই আম-মোক্তারনামা পাওয়ার আগে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে আরেকটি আম-মোক্তারনামা তৈরি করেন। তা ব্যবহার করে ওই জমি ও ভবন বন্ধক দিয়ে ঋণ নেন এবং পরে আবার তা ফিরিয়ে দেন। অথচ জমি ও ভবনের প্রকৃত মালিকদের দেওয়া আম-মোক্তারনামায় এ ধরনের ক্ষমতা জিয়াউল ইসলামকে দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শক্তিশালী ঔপন্যাসিক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ লিখেছেন ‘লালসালু’, ‘কাঁদো নদী কাঁদো’র মতো বহুলপঠিত ও নন্দিত উপন্যাস। তিনি ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে পাকিস্তান সরকারের কূটনৈতিক কর্মকর্তা হিসেবে বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬০ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত প্যারিসে পাকিস্তান দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন তিনি। পরে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি প্যারিসে ইউনেস্কোর প্রোগ্রাম স্পেশালিস্ট হিসেবে কাজ করেন। ওই বছর মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রবাসে থেকেই বাংলাদেশে স্বাধীনতার পক্ষে প্রচার চালান। ১৯৭১ সালের ১০ অক্টোবর ৪৯ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন স্বনামধন্য এই কথাসাহিত্যিক।
অন্যদিকে, নির্মাণ ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামাল জিয়াউল ইসলাম একসময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ছিলেন।
সারাবাংলা/এআই/টিআর