Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেওয়া ঈমানি দায়িত্ব: চরমোনাই পীর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১০ আগস্ট ২০২৪ ২০:০৯

চট্টগ্রাম ব্যুরো: দেশের সংখ্যালঘুদের জানমাল ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা দেওয়া ঈমানি দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে নগরীর লালদিঘী ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

শেখ হাসিনার বিচারের দাবি জানিয়ে সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, ‘সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশায় দেশবাসী। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি না মেনে খুনি হাসিনা সরকার নির্বিচারে পাখির মতো গুলি করে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। এ বর্বর হত্যাযজ্ঞ দেখে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারিনি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘খুনি হাসিনাসহ সকল হত্যাকারী, বিদেশে অর্থপাচারকারী, দুর্নীতিবাজদের বিচার করতে হবে। পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে এনে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। সুন্দর একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশায় দেশবাসী। বিগত জালেম সরকারের নির্বাচন কমিশনে জড়িতদের বিচার করে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে। দেশের সংখ্যালঘুদের জানমাল, ধর্মীয় উপাসনালয়ের নিরাপত্তা দেওয়া ঈমানি দায়িত্ব।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বর ও নৃশংস আওয়ামী দুঃশাসন উৎখাতের সংগ্রামের সূচনা করেছে আমাদের শিক্ষার্থী সমাজ। তাদের অসীম সাহস, ত্যাগ ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব আমাদের গর্বিত করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ শুরু থেকেই এ আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকেছে। গত ১৯ জুলাই আমরা পরিষ্কার করে জানিয়েছি যে, সরকারের পদত্যাগই একমাত্র সমাধান।’

রেজাউল করীম বলেন, ‘শুরু থেকেই নানাভাবে ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা এ আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। সেজন্য আমরা গর্ব বোধ করি যে, নৃশংস এক জালিমের পতনের মহান বিপ্লবে আমরা ভূমিকা নিতে পেরেছি। আমাদেরও অনেক ভাই জীবন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন।’

এদিকে, সমাবেশ থেকে দলের পক্ষে নয় দফা দাবি তুলে ধরেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় এমন সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ করে অনুর্ধ্ব ১৫ সদস্যবিশিষ্ট অন্তর্বতীকালীন সরকার গঠন করতে হবে; যার মেয়াদ ৬ মাসের বেশি হতে পারবে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কেউ পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিশন ও স্বতন্ত্র ট্রাইবুনাল গঠন করে জুলাই গণহত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে। একইসঙ্গে গত ১৬ বছরে সংগঠিত সব রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হত্যাযজ্ঞ, গণহত্যা, গুম ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করতে হবে। তদন্ত সাপেক্ষে আহত ও নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণসহ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যক্তি বা সংগঠন দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের রাজনীতি ও নির্বাচন থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে, তদন্ত সাপেক্ষে গত ১৬ বছরে সকল দুর্নীতিবাজ ও বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের সব সম্পত্তি ক্রোক করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করতে হবে এবং বিদেশে পাচার করা টাকা ফেরত আনার উদ্যোগ নিতে হবে।

বিগত ১৬ বছরে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে। সকল দুর্নীতি ও টাকা পাচারের শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, বিচার বিভাগসহ প্রজাতন্ত্রের যে সকল কর্মচারী আইন, সংবিধান, শপথ লঙ্ঘন করে অপেশাদার আচরণ করেছেন তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।

দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনা ও অনুভূতির বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে এবং অবাধ, সুষ্ঠ গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে। বিগত তিনটি নির্বাচন বাতিল করতে হবে এবং নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

গত ১৬ বছরে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এদেশের সাধারণ শিক্ষাখাতের মান ও নৈতিকতা। এ ক্ষতি দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে দেশপ্রেমিক শিক্ষাবিদ ও উলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে একটি জাতীয় শিক্ষাকমিশন গঠন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে থেকে প্রতিনিধি অবশ্যই থাকতে হবে।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

ঈমানি দায়িত্ব চরমোনাই পীর সংখ্যালঘু


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর