দুর্নীতি মামলা থেকে খালাস পেলেন ড. ইউনূস
১১ আগস্ট ২০২৪ ২১:৫৭
ঢাকা: গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীর সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১১ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দেন।
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ জুন অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী মামলার প্রসিকিউশন প্রত্যাহারের জন্য আজ আদালতে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই আবেদন গ্রহণ করেন।
গ্রামীণ টেলিকমের কর্মীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছরের ৩০ মে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এরপর গত ২৯ জানুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কমিশন বৈঠকে ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়।
পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ আছাদুজ্জামানের আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আসামিরা ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এরপর গত ১২ জুন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আদেশ দেয় আদালত।
চার্জশিটভুক্ত ১৪ আসামি হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দফতর সম্পাদক কামরুল হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম।
এরপর গত ৮ জুলাই অভিযোগে গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাত জন। ড. ইউনূস ছাড়া বাকি আবেদনকারীরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, সাবেক এমডি আশরাফুল হাসান, পরিচালক নাজনীন সুলতানা, শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী।
হাইকোর্ট অভিযোগ গঠনের বৈধতা এবং মামলা বাতিল চেয়ে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ সাতজনের আবেদন খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে এক বছরের মধ্যে বিচারিক আদালতকে মামলাটি নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। এদিকে, গত বুধবার ড. ইউনূসকে শ্রম আইন লঙ্ঘনে ছয় মাসের সাজা থেকে খালাস দেন আদালত।
দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ ও দেশত্যাগ করেন। পরে গত বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম