মায়ের যে বক্তব্য ছাপা হয়েছে, তা বানোয়াট: জয়
১২ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৩৫
ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে যাওয়ার ছয় দিনের মাথায় তাকে উদ্ধৃত করে একটি বক্তব্য ছাপিয়েছিল ভারতীয় একটি গণমাধ্যম। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় দাবি করছেন, এমন কোনো বক্তব্য শেখ হাসিনা দেননি। এ বক্তব্য বানোয়াট বলে দাবি করেছেন তিনি।
দ্য প্রিন্টের খবরে বলা হয়, নিজের ক্ষমতাচ্যুতির পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শেখ হাসিনা। শিগগিরই দেশে ফেরার আশাবাদ জানিয়েছেন তিনি।
তবে রোববার (১১ আগস্ট) রাতে মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে জয় লিখেছেন, ‘সম্প্রতি একটি পত্রিকায় আমার মাকে উদ্ধৃত করে তার পদত্যাগের যে বিবৃতি ছাপা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি। নিশ্চিত হয়েছি, তিনি ঢাকা ছাড়ার আগে বা পরে কোনো বিবৃতি দেননি।’
আরও পড়ুন- যুক্তরাষ্ট্রের ‘ষড়যন্ত্রে সরকার’ পতন, শিগগিরই ফিরব: শেখ হাসিনা
৫ আগস্ট পদত্যাগের পর থেকে এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি। বঙ্গভবনসহ বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ওই সময় তিনি একটি ভাষণ রেকর্ড করতে চেয়েছিলেন। তবে সেই ভাষণ রেকর্ডের সময় তিনি পাননি।
দেশত্যাগের পর শেখ হাসিনা সামরিক একটি হেলিকপ্টারে করে প্রথমে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলা ও পরে সেখান থেকে আরেকটি সামরিক উড়োজাহাজে করে দেশটির রাজধানী দিল্লির কাছেই গাজীয়াবাদে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটিতে অবতরণ করেন। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সেখানে তাকে স্বাগত জানান। তবে শেখ হাসিনা কোনো মাধ্যম বা ভারতীয় কোনো কর্তৃপক্ষই এ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিফ করেনি।
আরও পড়ুন- পদত্যাগ করেননি, শেখ হাসিনাই এখনো প্রধানমন্ত্রী— রয়টার্সকে জয়
ওই দিন তথা ৫ আগস্ট থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়ে যাচ্ছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। মায়ের সঙ্গে তার কথোপকথনকে উদ্ধৃত করে নানা বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই রোববার ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এক প্রতিবেদনে লিখেছে, দেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেই বার্তায় তিনি বলেন, মানুষেরর মৃত্যু ও সম্পদহানি ঠেকাতেই তিনি সরে গেছেন। তার সরকারকে উৎখাত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র দায়ী। সেন্টমার্টিন দ্বীপকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিলে তিনি হয়তো ক্ষমতায় থাকতে পারতেন।
শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে প্রিন্ট আরও বলছে, শেখ হাসিনা তার বার্তায় শিগগিরই বাংলাদেশে ফেরার আশাবাদও জানিয়েছেন। বলেছেন, কর্মীরা যেন মনোবল না হারায়। আওয়ামী লীগ বরাবরই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন- ভারতেই থাকবেন শেখ হাসিনা
জয় দ্য প্রিন্টে ছাপা এসব বক্তব্যকেই বানোয়াট অভিহিত করেছেন। এর আগে তিনি নিজে গত শুক্রবার রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। সেই সময় তিনি পাননি। ফলে সাংবিধানিকভাবে তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জনগণের উদ্দেশে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানেই তিনি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন বলে জানিয়েছিলেন। রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনও এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘কাউন্সিলের মিটিংয়ে আমি যেটা জানতে পেরেছি, সেটা হলো যে তিনি পদত্যাগ করেছেন এবং পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতির কাছে আছে। এটুকু তথ্য কনফার্ম করা হয়েছে।’
সারাবাংলা/টিআর
টপ নিউজ দ্য প্রিন্ট শেখ হাসিনা শেখ হাসিনার পদত্যাগ সজীব ওয়াজেদ জয়