মেয়র-কাউন্সিলরদের খোঁজ নেই, অচল চসিক সচলের চেষ্টা
১২ আগস্ট ২০২৪ ২০:১১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ ছেড়ে দেশত্যাগের পর ক্ষমতার পটপরিবর্তনে আত্মগোপনে চলে গেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী ও অধিকাংশ ওয়ার্ড কাউন্সিলর। মেয়র-কাউন্সিলরবিহীন চসিকের কার্যক্রম গত ছয়দিন ধরে অচল থাকার পর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন কর্মকর্তারা।
চসিকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পটপরিবর্তনের পর কয়েকটি ওয়ার্ড কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে, যাতে প্রায় চার কোটি ৩২ লাখ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড কার্যালয়ের সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে নাগরিক সেবা দ্রুত চালুর চেষ্টা করছেন কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে মেয়রের বাড়ি, ২৭টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের পাঁচটি কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এরপর থেকে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী আর কার্যালয়ে আসছেন না। ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়গুলোও তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল গত ছয়দিন। তাদেরও কেউ কার্যালয়ে আসছেন না। ফলে জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয়তা সনদ, চারিত্রিক সনদ, উত্তরাধিকার সনদ, ওয়ারিশান সনদ নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন সাধারণ নাগরিকরা।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, ৪১ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১৪ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলরের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
মেয়রের অনুপস্থিতির কারণে চসিকের বিভাগগুলোর কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে গেছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা নিয়মিত কর্মস্থলে উপস্থিত থাকছেন। শুরুর দিকে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে যায়। তিন দিনে প্রায় দশ হাজার টন বর্জ্য জমে যায়। গত ৮ আগস্ট চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করে কার্যক্রম সচল করেন।
চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পরিচ্ছন্ন বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগের কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা চালু আছে। নাগরিক সেবা আগের অবস্থায় ফেরাতে আমরা কাজ করছি।’
এদিকে, চসিকের জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে হামলা-ভাঙচুর হয়েছে। নয়টি ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় অক্ষত আছে। পাঁচটি কার্যালয় থেকে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ১৪টি সংরক্ষিত কাউন্সিলরের কার্যালয়ের মধ্যে পাঁচটি আক্রান্ত হয়েছে। নয়টি কার্যালয়ের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৩১ লাখ ৬৩ হাজার ২০০ টাকা বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ওয়ার্ড সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আজ (সোমবার) থেকে ওয়ার্ড অফিসগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলররা অনেকটা আত্মগোপনে আছেন। আমাদের সঙ্গে ১৭-১৮ জনের যোগাযোগ হয়েছে। বলতে গেলে, উনারা ওপেন হয়েছেন। যত দ্রুত সম্ভব প্রত্যেকটি কাউন্সিলরের কার্যালয় সচল করে সেখান থেকে যাতে নাগরিক সেবাটা দেওয়া যায়, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম