Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে নতুন চক্রান্তে লিপ্ত: ফখরুল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৩ আগস্ট ২০২৪ ২২:০০

ঠাকুরগাঁও: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শেখ হাসিনা ভারতের দিল্লিতে বসে নতুন চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছে। যখন তারা মানুষের সামনে দাঁড়াতে পারে না, তখন হিন্দু ভাইদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চায়। এটা তাদের অপচেষ্টা, কৌশল, খেলা। যখন তারা সমস্ত খেলায় পরাজিত হবে, নির্বাচনে হেরে যাবে, তখন তারা বলবে হিন্দু ভাইদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টায় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে তিনি এ সব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আপনারা জানেন, বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একটি গাছে ফুলের মত ফুটে রয়েছে। আমাদের এ সম্পর্কের মধ্যে তারা ফাটল ধরাতে চায়। আওয়ামী লীগ এগুলো ছড়িয়ে দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করতে চায়।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের কথা খুব পরিষ্কার, রাজনৈতিক পট যখন পরিবর্তন হয়, তখন একটা গোলযোগ হয়। সেই গোলযোগটা কখনো ধর্মীয় নয়, সেটা রাজনৈতিক। আমরা সবসময় হিন্দু ভাইদের ভোট পেয়েছি, তাহলে আমরা তাদের কেন আলাদা ভাবব।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় ১৫ বছর আমরা একটা স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, ভয়াবহ নির্যাতনকারী শাসক গোষ্ঠীর দ্বারা নির্যাতিত, নিপীড়িত। আমাদের প্রায় সাতশ’ নেতা-কর্মী গুম হয়েছে। প্রায় হাজার খানেক নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। গণ গ্রেফতার করে এই সরকার ১৫ বছর কাটিয়েছে। প্রায় ২৭ হাজার নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এত নির্যাতনের পরেও আপনারা কখনও হাল ছেড়ে দেননি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এবার আমাদের ছাত্ররা, আমাদের সন্তানেরা যখন আন্দোলন শুরু করল তখন সরকার প্রায় ছয় জনকে হত্যা করেছে। পুলিশ যখন নিরীহ ছেলেদের গুলি চালালো তখন শিক্ষার্থীরা গর্জে উঠল। সান্ধ আইন চালু হলো। কিন্তু তাকে অগ্রাহ্য করে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নামল। অসংখ্য ছেলে যখন মারা গেল তখন তাদের বাবা-মারাও রাস্তায় নেমে এল। ঠাকুরগাঁওয়ে ৪ আগস্ট হাজারো নেতা-কর্মী বড় মাঠে একত্র হয়ে আন্দোলন করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘এসবের মধ্যে একটি ঘটনা চোখে পড়েছে, অবিশ্বাস্য। সেটা হলো- লাখ লাখ মানুষ, ছেলে, মেয়ে, শিশু, বৃদ্ধ সবাই রাস্তায় নেমে বুক পেতে দিয়ে বলেছে, গুলি কর, আমরা রাস্তা ছেড়ে যাব না। আপনাদের রংপুরের সাঈদের কথা মনে আছে, মুগ্ধর কথা মনে আছে নিশ্চয়। এই ভয়াবহ দানবীয় সরকারের পুলিশ তাদের গুলি করে মারল। যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে আমাদের সাধারণ মানুষজনের ওপর সেটা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। তাই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে হাসিনা। ৫ তারিখ দুপুরে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তার দোসরেরাও পালিয়েছে, অনেকে পালাতে পারে নাই। পালিয়েও লাভ হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আল্লাহকে অস্বীকার করে জনগণের ওপর যে অত্যাচার করেছে, আমাদের ওপর যে অত্যাচার করেছে, আলেম-ওলামাদের ফাঁসি পর্যন্ত দিয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের দিনের পর দিন কারাগারে রেখেছে, আমিও কারাগারে ছিলাম অনেকদিন। তার পরেও শেষ রক্ষা হয় নাই। পালিয়ে যেতে হয়েছে এবং দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। এখন আশ্রয় নিয়েছে দিল্লিতে। ব্রিটেন অস্বীকার করেছে, আমেরিকা বলেছে নিবে না। এখন পর্যন্ত ভারতও অফিসিয়ালি আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি, এখন পর্যন্ত তিনি সেখানে আছেন।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই ছাত্র ভাইদের, যারা এদেশকে রক্ষা করেছে। সেইসঙ্গে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে। যারা প্রয়োজনের মধ্যে জনগণের পাশে এসে দাঁড়ায়।’

সদর উপজেলা বিএনপির আয়োজনে শান্তি ও সম্প্রীতি সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, সহ-সভাপতি ওবায়দুল্লাহ মাসুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম শরিফ, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি ফোরাতুন নাহার প্যারিস, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. কায়েস, স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল রানা, গড়েয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেদওয়ানুল হক রেদো শাহসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা।

এর পর বিকেলে তিনি রুহিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ঐক্য ও সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসিবে বক্তব্য দেন। পরে আন্দোলনে নিহত চার জনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মির্জা ফখরুল।

সারাবাংলা/পিটিএম

চক্রান্ত টপ নিউজ দিল্লি বিএনপি মির্জা ফখরুল শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর