চাঁদের গাড়ি খাদে, প্রাণ গেল ৩ জনের
১৩ আগস্ট ২০২৪ ২৩:৫৭
রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার সীমান্ত সড়ক এলাকায় একটি চাঁদের গাড়ি (জিপ) পাহাড়ি খাদে পড়ে তিনজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ দুর্ঘটনায় আহত ছয়জনকে জেলার রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে দুজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রামে রেফার্ড করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার পানকাটাছড়ি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। হতাহতরা সবাই জেলার রাজস্থলী ও জুরাছড়ি উপজেলার বাসিন্দা।
দুর্ঘটনায় তিনজন নিহতের খবর পাওয়া গেলেও নাম-পরিচয় জানা গেছে দুজনের। তারা হলেন— রাজস্থলী উপজেলার বালুমুড়া এলাকার বাসিন্দা জিপচালক চিনু মং মারমা (২৫) ও জুরাছড়ি উপজেলার পানকাটাছড়ি এলাকার বাসিন্দা মনো চাকমা (১৮)। তাদের একজন দুর্ঘটনাস্থলেই নিহত হন। রাজস্থলীতে নেওয়ার সময় মৃত্যু হয় আরেকজনের।
আহতরা হলেন— রাজস্থলী উপজেলার বালুমুড়া এলাকার বাসিন্দা ক্য সি নু মারমা (২০), জুরাছড়ি উপজেলার পানকাটাছড়ি এলাকার বাসিন্দা কালুকেতু চাকমা (৪৫), বসতা চাকমা (৪৫), বারমু চাকমা (২০), দোলাইয়া চাকমা (৩৫) ও সুরজ্যোতি চাকমা (২০)।
এই ছয়জনের মধ্যে কালকেতু চাকমা ও বসতা চাকমাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জেলার বিলাইছড়ি-রাজস্থলীর সীমান্ত সড়কের কাজ শেষ করে চাঁদের গাড়িটি বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া বাজার থেকে গন্তব্যের দিকে দিকে যাচ্ছিল। পথে পানকাটা ছড়া এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারালে জিপটি গভীর খাদে পড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলেই চালকের মৃত্যু হয়। আহত হন আরও আটজন। এর মধ্যে রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় আর দুজনের মৃত্যু হয়। তাদের একজনকে আর হাসপাতালে নেওয়া হয়নি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. সৌরীন্দ্র বড়ুয়া বলেন, ‘দুর্ঘটনায় মোট তিনজন নিহতের খবর পেয়েছি। তবে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি দুজনকে। আরেকজনকে হাসপাতালে না এনে বাসায় নিয়ে যাওয়ার খবর জেনেছি।’
সৌরীন্দ্র আরও বলেন, ‘হাসপাতালে আহত অবস্থায় ছয়জনকে আনা হয়েছিল। আমরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকা দুজনকে চট্টগ্রামে রেফার্ড করেছি। তাদের একজনের পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, আরেকজনের শরীরে আঘাতের কারণে রক্ত জমাট বেঁধে গেছে বলে আমরা ধারণা করছি।’
রাজস্থলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সীবলি শফিউল্লাহ বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে হাসপাতালে নিহত দুজনসহ আটজনকে আনা হয়েছিল। আহত দুজনকে চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। বাকি চারজন এখানে চিকিৎসাধীন। সকালে আবার তাদের শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। তবে আমাদের এখানে অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞ নেই। ফলে তাদেরও রেফার করা হতে পারে।’
এদিকে রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনাটি ঘটেছে জুরাছড়ি উপজেলার পানকাটা এলাকায়। আমরা তিনজন নিহতের খবর পেয়েছি।’
সারাবাংলা/টিআর