ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের দেখতে ঢাকা মেডিকেলে আসেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশীদ। তিনি জানান, প্রত্যেক হাসপাতাল থেকে তথ্য নিয়ে আহতদের ডাটাবেজ তৈরি করা হবে।
সোমবার (১৯ আগস্ট) সকালে আহত রোগীদের দেখতে আসেন।
উপদেষ্টা শারমিন এস মুর্শিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই যে বাচ্চারা যারা আহত হয়েছে, যারা নিহত হয়েছে তাদের স্মরণ রাখার জন্য যেটা করার আমরা করবো। একাত্তর দেখেছি, ২০২৪ও দেখলাম, এটা মুছে যাবে না ইতিহাস থেকে জনগণের স্মৃতি থেকে। তাদেরকে আমরা স্যালুট জানাই, ঠিক যেমন মুক্তিযোদ্ধাদের স্যালুট জানাই। এখন ভাবতে শুরু করেছি কিভাবে দেশকে এগিয়ে নেব। পেছনের ভুলগুলেকে দ্বিতীয়বার হতে দেব না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বাচ্চারা যারা যুদ্ধ করলো তাদের প্রতিষ্ঠা তাদের পুর্নবাসন, তাদের সুস্বাস্থ্য ঠিক করা প্রধান দায়িত্ব। তাদেরকে স্কুলে, কর্মে ফিরে আনতে হবে এবং মূলধারায় নিরাপদ জীবন দিতে হবে। তারা আজ জীবন দিয়েছে বলে, আমি আজ আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার পক্ষে সেটা ভুলা একটা মুহূর্তের জন্য সম্ভব না।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা হাসপাতালকে অনেকভাবেই সমলোচনা করি। কিন্তু আমাদের বাচ্চাদের যত্নসহকারে চিকিৎসা চলছে, সেটা প্রশংসার। আমাদের যে স্বাস্থ্যসেবা টিম আছে, সেটা আবার নতুন করে দেখছি, নতুন করে জানছি, তাদের অন্তর থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজ ডাক্তারদের মধ্যে যে ভালোবাসা দেখলাম, সেটা একদিন সারাদেশে সব মানুষের জন্য তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসার পরে যেটা হবে অনেক বাচ্চারা মানসিক ভাবে আক্রান্ত হয়েছে, কর্ম হারিয়ে ফেলেছে, অনেকের পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে; কারণ এরাই ছিল পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী। সেই জায়গায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে। আমি এখানে এসেছি, তাদের পুর্নবাসন কিভাবে ঘটাবো সেজন্য। সারাদেশের প্রত্যেকটা হাসপাতাল থেকে আমরা ডাটাবেজ তৈরি করবো। এইভাবে প্রত্যেকটা রোগীর দ্বারস্থ হবে সমাজকল্যাণ।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই বাচ্চারা পুর্নবাসিত না হলে, সুস্থ না হলে এই দেশ সুস্থ থাকবে না। আমরা কেউ সুস্থ থাকবো না। আমি আজ ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছি, সমাজকল্যাণের আওতায় যতো প্রকল্প আছে, যত প্রোগ্রাম আছে, সেগুলো এই বাচ্চাদের উপরে ফোকাস করে সাজাতে। যাতে কোন জায়গায় আমাদের আটকাতে না হয়।’
সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করে তিনি বলেন, ‘যেকোন সময় আপনাদের যন্ত্রপাতি নিয়ে ওয়ার্ডে ঢুকবেন না। এবং আপনাদের মাধ্যমে অন্যদেরও বলতে চাই, আহতদের এখনো ইনফেকশনের ভয় আছে, সেজন্য ওয়ার্ডে ভিড় করবেন না।’