কাজ শুরু করলেন ঢাকার ২ সিটি প্রশাসক, কাউন্সিলরদের সিদ্ধান্ত পরে
২১ আগস্ট ২০২৪ ০৮:৪০
ঢাকা: রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে যোগ দিয়েছেন নবনিযুক্ত দুই প্রশাসক। কাজে যোগ দিয়েই সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে নাগরিক সেবা অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। তবে দুই সিটি করপোরেশনেরই অনুপস্থিত কাউন্সিলরদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পরে হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) গুলিস্তান ও গুলশানের নগরভবনে যোগ দেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের দুই প্রকাশক। প্রথমদিন যোগ দিয়ে সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষ সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করেন তারা। এসময় সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম পরিচালনায় জনগণের সহযোগিতা চান দুই প্রশাসক।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নবনিযুক্ত প্রশাসক ড. মোহাম্মদ শের আলী বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীদের সঙ্গে নগর ভবনে মতবিনিময় করেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন, একটা বিশেষ প্রেক্ষাপটে সরকার আমাকে ডিএসসিসির প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন। সে প্রেক্ষিতে আজ সহকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি।’
প্রশাসক বলেন, ‘তাদের কাছ থেকে কাজে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কিনা, সে বিষয়ে অবহিত হয়েছি। সেগুলো বিশেষ করে নাগরিক সেবা আরও সুন্দরভাবে, আরও দক্ষতার সঙ্গে জনগণকে প্রদানের দিক-নির্দেশনা দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘যে সেবাগুলো ডিএসসিসি থেকে দেওয়া হয়, সেগুলো অব্যাহত আছে ও অব্যাহত থাকবে। কাউন্সিলরগণের মাধ্যমে যে সেবাগুলো দেওয়া হয় সে বিষয়গুলোর কি হবে এবং কাউন্সিলরদের অবস্থানের বিষয়ে সরকার কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কাউন্সিলরদের যে অফিসগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে অফিসগুলোর বিষয়ে আমরা নজর দিচ্ছি। যাতে করে সেবাগুলো আমরা আরও সুন্দরভাবে দিতে পারি।’
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) নবনিযুক্ত প্রশাসক মো. মাহমুদুল হাসান নগর ভবনে সকল বিভাগীয় প্রধান এবং ঊর্ধ্বতন অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডিএনসিসির সার্বিক কার্যক্রম বিষয়ে সভা করেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। বর্তমান সরকারের কাছে ছাত্র-জনতার যে প্রত্যাশা সেটি পূরণে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করব। ডিএনসিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী সেবার পরিসর বৃদ্ধি করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এ সময় ডিএনসিসির কার্যক্রম পরিচালনায় জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হবে উল্লেখ করে মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করা হবে। খালের ময়লা পরিষ্কার করে ও অবৈধ দখলমুক্ত করে খালের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করা হবে। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনসহ অন্যান্য সব নৈমিত্তিক সেবাগুলো অব্যাহত রাখা হবে।’
ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, ‘ডিএনসিসির কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনের বিষয়ে এখনও সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী কাউন্সিলরদের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের সব আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়মিতভাবেই নিরীক্ষা কার্যক্রমের আওতায় চলে আসে। তাই যেকোনো অনিয়ম বা দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উল্লেখ্য, সোমবার (১৯ আগস্ট) এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ দেশের মোট ১২ সিটিতে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর থেকেই ঢাকার দুই মেয়র ও অধিকাংশ কাউন্সিলর আত্মগোপনে আছেন বা বিদেশে পালিয়ে গেছেন।
সারাবাংলা/আরএফ/এমও