খাগড়াছড়িতে হাজারও পরিবার পানিবন্দি, উদ্ধারে সেনাবাহিনী
২২ আগস্ট ২০২৪ ১৯:১৯
খাগড়াছড়ি: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার নয় উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেনে প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দিঘীনালা, মাটিরাঙা,খাগড়াছড়ি সদর, মহালছড়ি ও পানছড়ি উপজেলার নিন্মাঞ্চলের মানুষ। পানির স্রোতে ও পাহাড় ধসে অনেকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে, সেতু ও রাস্তা ভেঙে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
আক্রান্ত লোকজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। বিভিন্ন রাস্তায় তাবু করে আশ্রয় দেয়া হয়েছে গবাদি পশুগুলোকে। খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদী তীরবর্তী গঞ্জপাড়া, বাঙ্গালকাঠি, বটতলী, চাকমা পাড়া, মুসলিমপাড়া, মেহেদীবাগ, কালাডেবা, রুইখই চৌধুরীপাড়া, খবং পুড়িয়া সহ কমপক্ষে ২০ গ্রামের হাজারও পরিবার পানিবন্দি। এসব লোকজনকে উদ্ধার করতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
সেনাবাহিনীর উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল
শরীফ মো. আমান হাসান। একই অবস্থা দিঘীনালা উপজেলার ১৫/২০ গ্রামে, পানছড়ি উপজেলার ১৮ গ্রামে, মাটিরাংগা উপজেলা প্রায় ৩০ গ্রামে, মহালছড়ির ১৮/২০ গ্রামবাসীসহ সব উপজেলার নিন্মাঞ্চলীয় গ্রামগুলোর।
এছাড়া মহালছড়ি উপজেলার সঙ্গে মুবাছড়ি ইউনিয়নের সিঙ্গিনালা গ্রামের কাপ্তাই পাড়া এলাকায় একমাত্র সড়কের সেতুর সংযোগ সড়কটি ভেঙে গিয়ে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালের পরে এটিই খাগড়াছড়ি জেলার জন্য সবচেয়ে বড় বন্যা। এর আগে কখনো এতো পানি দেখেনি পাহাড়ি এলাকা খাগড়্ছড়ি জেলা। পুকুর, নদী, খাল-বিল ভরে পানি ডুকে পড়েছে লোকালয়ে। মাছ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বললেও ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, খাগড়াছড়ি ইউনিটের সেক্রেটারী মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ রেড ক্রিসেন্ট খাগড়াছড়ি ইউনিট এর স্বেচ্ছাসেবকরা সরকারি ত্রাণ বিতরণ কাজে সহযোগিতা করছে।
এদিকে, রেড ক্রিসেন্ট সদর দফতরে জরুরি ত্রাণ বরাদ্দের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। খাগড়াছড়ি পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. শাহ আলম জানান, গত তিন দিনে খাগড়াছড়ি পৌরসভায় প্রায় ১০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান জানান, বন্যা ও পাহাড় ধসের ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের জন্য খাগড়াছড়ি পৌর এলাকায় ১৮টিসহ পুরো জেলা ৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের লোকজন আশ্রয় নিয়েছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৪১২ মেট্রিক টন খাদ্য শস্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় সবার সহযোগিতা চান জেলা প্রশাসক।
সারাবাংলা/এনইউ