Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ আগস্ট ২০২৪ ১৭:৪৫

ঢাকা: বাংলাদেশের ওপর ভারত পানি আগ্রাসন চালায় বলে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।

তারা বলেন, আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করে ভারত ৫৪টি নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশ পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে যেমন বঞ্চিত হয়ে মরুকরণের ঝুঁকিতে পড়ছে, তেমনি বর্ষা মৌসুমে বাঁধের গেট খুলে দিয়ে আমাদেরকে ভাসিয়ে মারছে ভারত।

বিজ্ঞাপন

জোট নেতারা বলেন, ভারতের এই পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার চাওয়ার দাবি জানাচ্ছে বাম জোট। একই সঙ্গে দেশবাসীকে ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) এক যৌথ বিবৃতিতে জোট নেতারা এসব কথা বলেন। বিবৃতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা শিশু, বাসদ (মার্কসবাদী) সমন্বয়ক কমরেড মাসুদ রানা ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি কমরেড আব্দুল আলী সই করেছেন।

সংবাদপত্রে পাঠানো বিবৃতিতে ফেনী, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়িসহ ৯ জেলায় আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। বন্যা কবলিত জেলাগুলোকে উপদ্রুত এলাকা ঘোষণা করে যুদ্ধকালীন প্রস্তুতিতে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে বানভাসি মানুষকে উদ্ধার, নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা প্রদানের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে জোটটি।

বিজ্ঞাপন

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ভারী বৃষ্টিপাতে নদ-নদীর পানি বাড়ছিল। তার ওপর উজানে ভারত মহুরী নদীর কলসী বাঁধ ও গোমতি নদীর ডম্বুর বাঁধ পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই খুলে দেওয়ায় প্রবল স্রোতে ঘরবাড়ি, গবাদি পশু ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়ায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ১০-১২ ফুট উঁচু হয়ে শহর এবং হাজার হাজার একর ফসলের মাঠসহ অধিকাংশ জায়গা প্লাবিত হওয়ায় মানুষজন বাড়ির ছাদে আশ্রয় নিয়েও নিরাপদ বোধ করছে না।

জোট নেতারা বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী উজানের কোনো দেশ নদীর ওপর দেওয়া বাঁধের গেট খুলে দেওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে ভাটির দেশকে জানানোর কথা। কিন্তু এবারে পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই ডম্বুর ও কলসী বাঁধ খুলে দিয়ে ভারত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু আশ্চার্যের বিষয়, যৌথ নদী কমিশনের বাংলাদেশের সদস্যরা এখনো ভারতের কাছে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ জানিয়েছে বলে শোনা যায়নি। এর মধ্য দিয়ে বিগত সরকারের মতো অন্তর্বর্তী সরকারও সাম্রাজ্যবাদী-আধিপত্যবাদী ভারত সরকারের প্রতি নতজানু নীতি নিয়ে চলছে কি না, তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে।

অবিলম্বে বন্যার্তদের সেনাবাহিনী ও নৌ বাহিনীকে হেলিকপ্টার ও কোস্ট গার্ডের বোট দিয়ে উদ্ধার, নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া ও পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একই সঙ্গে জোটের নেতাকর্মীসহ সমাজের সামর্থ্যবান ব্যক্তিদেরকে বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও ত্রাণ সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

পানি আগ্রাসন বাম গণতান্ত্রিক জোট ভারত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর