Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নিয়োগ পেয়েই দখল করলেন রেজিস্ট্রারের দফতর ও গাড়ি

জবি করেসপন্ডেন্ট, আবু সুফিয়ান সরকার শুভ
২৪ আগস্ট ২০২৪ ১২:৪৭

জবি: ছাত্র-জনতার গণুঅভ্যুথানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১১ আগস্ট পদত্যাগ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম, হল প্রভোস্টসহ প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা। এতে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাব বিস্তারে ১৪ আগস্ট ট্রেজারার অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাহিদ আলমকে রেজিস্ট্রারের রুটিন দায়িত্ব প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে রেজিস্ট্রারের রুটিন দায়িত্ব পাওয়ার পর জাহিদ আলম রেজিস্ট্রারের ব্যবহৃত গাড়ি, অফিস ও চেয়ার দখল করেছেন। তার এমন কর্মকাণ্ডকে আইন বহির্ভূত ও অনৈতিক বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ১১ আগস্ট উপাচার্যের পদত্যাগের পর ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয়ে আধিপত্য বিস্তারে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড শুরু করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ অনুযায়ী প্রশাসনিক পদসহ অন্যান্য পদে নিয়োগ ও দায়িত্ব বণ্টনের এখতিয়ার কেবল উপাচার্যের। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে ১৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ জাহিদ আলমকে পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেন ট্রেজারার হুমায়ুন কবির চৌধুরী। যা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ এর সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।

এদিকে নিয়োগের পরই মোহাম্মদ জাহিদ আলম আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নিয়োগের পরপরই তিনি দখল করেছেন রেজিস্ট্রারের ব্যবহৃত গাড়ি ও অফিস।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো পদে রুটিন দায়িত্বে থাকাকালীন ওই পদ পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত নিজ অবস্থান থেকে সেই পদের দায়িত্ব পালন করবেন। রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ফাঁকা পদের অফিস কক্ষ কিংবা চেয়ার ব্যবহারসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাবেন না। তবে এই নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তিনি দখল করেছেন রেজিস্ট্রারের অফিস ও ব্যবহৃত গাড়ি। মোহাম্মদ জাহিদ আলমের এমন কর্মকাণ্ডকে অনৈতিক বলছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, তাকে নিয়োগই দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘন করে। একজন ট্রেজারার কখনোই কাউকে রেজিস্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন না। অবৈধভাবে নিয়োগের পর তিনি যেসব কর্মকাণ্ড করছেন সেগুলোও অপরাধ। রুটিন দায়িত্ব কাউকে দেওয়া হলে তিনি নিজের অফিসে থেকেই কাজ করবেন। বাড়তি কোনো সুযোগসুবিধা পাবেন না। অথচ তিনি অফিস, গাড়ি সব দখল করেছেন। এগুলো সম্পূর্ণ অবৈধ কর্মকাণ্ড।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তার নিয়োগই অবৈধ। সেই জায়গায় তিনি রুটিন দায়িত্ব নিয়ে যে অফিস, গাড়ি দখল করেছেন সেটিও অবৈধ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন লঙ্ঘনের অপরাধে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ আলম বলেন, আমি এই বিষয়ে এখন কিছু বলব না। আপনি তো আমাদের পরিবারেরই সদস্য, আপনি রোববার এসে আমার সঙ্গে দেখা করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, রুটিন দায়িত্বের রেজিস্ট্রার মো. জাহিদ আলম কাজের সুবিধার্থে তিনি রেজিস্ট্রারের রুমে বসেছেন। জাহিদ আলমের রুম রফিক ভবনে। প্রশাসনিক ভবন থেকে সব কাগজ রফিক ভবনে যাওয়া কষ্টকর কাজের সুবিধার্থে তিনি রেজিস্টারের রুম ব্যবহার করছেন।

আইন অনুযায়ী তার নিয়োগ বৈধ কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রেজারার বলেন, রুটিন দায়িত্বে চ্যান্সেলর দ্বিমত পোষণ করে না থাকলে তারা কাজ করতে পারবেন। তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চ্যান্সেলরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবদিক বিবেচনা করে একটি চিঠি দিয়ে অবগত করা হয়েছে।

সারাবাংলা/ইআ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) টপ নিউজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর