বন্যায় ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪৯ লাখ মানুষ, ১৮ জনের প্রাণহানি
২৪ আগস্ট ২০২৪ ১৪:৩৯
ঢাকা: এবারের বন্যায় দেশের ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত ৪৯ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৮ জন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) সচিবালয়ে চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।
বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে উল্লেখ করে ত্রাণ সচিব বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যা আক্রান্ত জেলার সংখ্যা ১১টি। ১১ জেলায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৪৯ লাখ ৩৮ হাজার ১৫৯ জন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ৯ লাখ ৪৪ হাজার ৫৪৮টি। এছাড়া, এখন পর্যন্ত বন্যায় মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে কুমিল্লায় চারজন, ফেনীতে একজন, চট্টগ্রামে পাঁচজন, নোয়াখালীতে তিনজন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় একজন, লক্ষ্মীপুরে একজন এবং কক্সবাজারে তিনজন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত তিন হাজার ৫২৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ৮৪ হাজার ৮৮৮ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বন্যাদুর্গত ১১ জেলায় এখন পর্যন্ত মোট তিন কোটি ৫২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব। এরমধ্যে ত্রাণের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২০ হাজার ১৫০ টন, শুকনো ও অন্যান্য খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১৫ হাজার পিস, শিশুর খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ এবং গো-খাদ্য কেনার জন্য ৩৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হবে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, আবহাওয়া সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস নেই। এ সময়ে মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই ও ধলাই নদী সংলগ্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এবং তৎসংলগ্ন উজানে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস নেই। এ সময়ে এই অঞ্চলের ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার মুহুরী, ফেনী, গোমতী ও হালদা নদী সংলগ্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এছাড়া, ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলোতে চিকিৎসাসেবা দিতে ৭০টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে। ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে বলে উল্লেখ করে কামরুল হাসান বলেন, বন্যাকবলিত জেলার জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২-৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে। ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ছাত্র সমাজ ও বিজিবি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত রয়েছে বলেও জানান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব।
তিনি আরো বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। উপদেষ্টা বর্তমানে ফেনীতে অবস্থান করছেন।
ফেনী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি ভি-স্যাট চালু করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/ইআ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বন্যায় প্রাণহানি