বেগুন গাছে টমেটো চাষ, সাড়া ফেলেছেন বদলগাছীর কৃষক ফারুক
২৫ আগস্ট ২০২৪ ১০:৪৮
নওগাঁ: এক সময় গ্রামাঞ্চলের পথে-ঘাটে, আনাচে-কানাচে ও রাস্তায় পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে উঠতো কাঁটা বেগুনের গাছ। এ গাছে অতিরিক্ত কাঁটা থাকায় একে অনেকেই কাঁটা গাছ বলে। গাছটিকে এক ধরনের আগাছা বলা চলে। তবে এ গাছকে এখন কাজে লাগিয়ে গ্রাফটিং (কাটিং কলম) পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। বদলগাছী উপজেলায় স্থানীয় এনজিও “মৌসুমী” পিকেএসএফ-এর সহায়তায় প্রথম কৃষকদের মাঝে এই টমেটো চাষ শুরু করেছে।
কৃষক ফারুক হোসেন নওগাঁর বদলাগাছী উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি গ্রাফটিং (কাটিং কলম) পদ্ধতিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। প্রতিকেজি টমেটো পাইকারী ১৩০টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। আধুনিক এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করায় এলাকায় বেশ সাড়া পড়েছে। এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষ দেখতে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, স্থানীয় এনজিও “মৌসুমী” থেকে চারা ও পরামর্শ নিয়ে তিনি টমেটো চাষ শুরু করেছেন। সাত শতক জমিতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ১৫ হাজার টাকার। জমিতে যে পরিমাণ টমেটো আছে তা ২০-২২ হাজার টাকায় বিক্রি হবে। খরচ বাদে সাতশতক জমি থেকে ২৫ হাজার টাকা লাভ হবে বলে তিনি জানান।
মৌসুমীর কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, পিকেএসএফ-এর আর্থিক ও কারিগরি সহাতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিট স্থানীয় উন্নয়ন সংস্থা “মৌসুমী” বেগুন গাছে টমেটো চাষ এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, সাত শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করতে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে পরের বছর ব্যয় কমে যাবে। এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষে বাঁশ ও পলিথিন দিয়ে ছাউনি ও বেড়া তৈরি করতে হয়। সাধারণত শীতকালীন টমেটো চাষে এগুলো লাগে না। গাছে ফুল এলে দুই দিন পর পর হরমোন ছিটাতে হয়। এ পদ্ধতিতে ঢলে পড়া রোগ হয় না এবং সার ও কীটনাশক খরচ কম লাগে। তবে দ্বিতীয় বছর ছাউনি দেওয়ার জন্য বাঁশ কিনতে হয় না এবং বেড়া দিতে হয় না।
মূলত আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করে আসছি। কৃষকরা যেন কম সময়ে, কম পরিশ্রমে ও স্বল্প খরছে বেশি লাভ করতে পারে সেই লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষ ব্যাপকভাবে হবে সেই লক্ষে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
বদলগাছী উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সাবাব ফারহান বলেন, কয়েক বছর আগেও এলাকার কৃষকেরা
বেগুন গাছে টমেটো টমেটো চাষ করা যায়, তা জানতেন না। এই চাষ পদ্ধতি সহজ ও ফলন ভালো হয় এবং রোগবালাই কম হয়। এই টমেটো দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে এই টমেটো চাষের আগ্রহ বাড়ছে। কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বদলগাছী উপজেলায় স্থানীয় এনজিও ‘মৌসুমী’ প্রথম কৃষকদের মাঝে এই টমেটো চাষ শুরু করেছে। তারা চারা, উপকরণ ও পরামর্শ দিচ্ছে। আগামীতে ব্যাপকভাবে এই এলাকায় কৃষকরা গ্রাফটিং (কাটিং কলম) পদ্ধতিতে টমেটো চাষ শুরু করবেন।
সারাবাংলা/এনইউ