Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘কয়েকজন ব্যক্তি রাষ্ট্র সংস্কার করে দেবে, এটা বিশ্বাস করি না’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৪ আগস্ট ২০২৪ ২০:২৭

ঢাকা: কয়েকজন ব্যক্তি মিলে রাষ্ট্রের সংস্কার করে দেবে, এটা বিশ্বাস করেন না বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি মনে করেন, সংস্কারটা জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে হতে হবে। আর এর জন্য প্রয়োজন নির্বাচন।

শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দু সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ভাসানী অনুসারী পরিষদ এ আলোচনা সভা আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। এই সরকারের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে, জনগণের আস্থা রয়েছে। কিন্তু অবশ্যই সীমিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে, যৌক্তিক সময়ের মধ্যেই করতে হবে। তা না হলে যে উদ্দেশ্যে এত কিছু, সেই উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ ব্যাহত হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এখন যারা ইন্টারিয়াম গভার্মেন্টে কাজ করছেন তারা সবাই আন্তরিক, যোগ্য মানুষ। কিন্তু আমরা এটাকে আরও ভিজিবল দেখতে চাই, আরও দৃশ্যমান দেখতে চাই। আমরা দেখতে চাই যে, প্রধান উপদেষ্টা অতিদ্রুত কী করতে চান, তা উপস্থাপন করবেন। একটা রোডম্যাপ দেবেন, কীভাবে তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করবেন, কীভাবে তিনি প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে জনগণকে স্বস্তি দিয়ে সামনের দিকে ‍এগুবেন নির্বাচন করার জন্য।’

‘আমি আবার রিপিট করতে চাই, ‘অবশ্যই অতিদ্রুত জনগণের যে চাহিদা সেই চাহিদাকে পূরণ করবার জন্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কীভাবে একটা নির্বাচন দ্রুত করা যায় এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায়, সেজন্য এই অন্তর্বতীকালীন সরকার কাজ করবে’— বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কথাটার ওপর জোর দিতে চাই। এই যে সংস্কারের বিষয়টা এসেছে, সবসময় আসছে সেই সংস্কারের জন্য নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সেটা কীভাবে আসবে? সেটা আসবে একটা নির্বাচিত পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে, তাদের মাধ্যমে সেটা আসতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কয়েকজন ব্যক্তি একটা সংস্কার করে দিলেন, এটা আমি বিশ্বাস করি না। আমি বিশ্বাস করি জনগণের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদের মাধ্যমে সেই সংস্কার আসতে হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এখন পর্যন্ত এই সরকারের সত্যিকার অর্থে কোনো এজেন্ডাভিত্তিক আলোচনা হয়নি। রাজনীতি ছাড়া তো এটা (সংস্কার) হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত তো নিতে হবে। ইন্টারিয়াম গর্ভামেন্টের যে জায়গাটাই তারা বসে আছেন, এটাই হচ্ছে রাজনীতির জায়গা। এখান থেকে দেশের সবকিছু অফিশিয়ালি চালিত হবে। সুতরাং যারা রাজনীতি করছেন তাদের সঙ্গে অবশ্যই মতবিনিময় করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘যে সকল ব্যক্তি হাসিনার (সাবেক প্রধানমন্ত্রীর) পাশে থেকে, তার সঙ্গে থেকে, তার দোসর হয়ে মানুষের ওপরে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন, লুটপাট করেছেন, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তাদের আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের আশ-পাশে দেখতে চাই না। পত্রিকায় যখন ছবি দেখি যে, এই সমস্ত লোকেরা আবার সংযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করছেন তখন আমরা উদ্বিগ্ন হই।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব চিন্তিত হই যে, আজ ১৬/১৭ দিন হয়েছে; এখন পর্যন্ত যেসব সেক্রেটারি ওই সরকারকে এতদিন ধরে চালিয়েছে, তাদের সমস্ত কুবুদ্ধিগুলো দিয়েছে, তারা এখনো এই সরকারের সচিবের দায়িত্ব পালন করছে। এটা আমরা দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই যে, অবিলম্বে বুরোক্রেসিতে যারা প্রো-পিপল আছেন, যারা জনগণের সঙ্গে সস্পৃক্ত আছেন, তাদের এই সরকারের পাশে দেখতে চাই। একথাগুলো আমরা বলতাম না। বলতে বাধ্য হচ্ছি এজন্যে যে, আমরা সেগুলো দেখতে পাচ্ছি না।’

তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো ভাইস চ্যান্সেলর নিয়োগ দেওয়া হয়নি। অথচ আগের ভাইস চ্যান্সলররা রিজাইন করেছেন। আমরা দেখতে চাই যে, ভাইস চ্যান্সলর নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, যাদের সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবু ইউসুফ সেলিমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বিএনপির নূর মোহাস্মদ খান, জহির উদ্দিন স্বপন, নজমুল হক নান্নু, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম

টপ নিউজ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সংস্কার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর