অযৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনে স্বাস্থ্যকর্মীরা, ভোগান্তিতে রোগীরা
২৬ আগস্ট ২০২৪ ০৯:২২
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে ২০২২ সালে নিয়োগ দেওয়া হয় ৬৪ জন আউটসোর্সিং স্বাস্থ্যকর্মী। এরপর ২০২৩ সালে তাদের মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত। মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তাদের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী হাসপাতালে না আসার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। যদিও তাদের নিয়োগ ও কাজ নিয়ে নানাসময় প্রশ্ন উঠেছিল। কাজে না এসেও অনেকের বিরুদ্ধে বেতন নেওয়ার অভিযোগও ছিল। আউটসোর্সিং কর্মীদের দাবি হচ্ছে, তাদের চাকরি পুনর্বহাল, বকেয়া বেতন পরিশোধ, আরএমও ও তত্ত্বাবধায়কের পদত্যাগ।
তবে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষরিত ১২ জুনের অফিস আদেশ বলছে, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ করা কর্মীদের চুক্তি বৃদ্ধি করা যাবে না। নতুন টেন্ডার আহ্বান করে নতুন মানুষ নিতে হবে। এর কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে একই সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সুনির্দিষ্ট একটি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে একাধারে কাজ করার ফলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়। তাই আউটসোর্সিং প্রক্রিয়ায় কর্মী সেবা নিতে মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা মানার আদেশ দেওয়া হয়।
নিয়ম অনুযায়ী চুক্তি বাতিলের পর চুপ থাকলেও গত ১৯ আগস্ট থেকে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সরব হন তারা। ৫ দিন ধরে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালে।
হাসপাতালের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে এমন অবস্থায় রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে তাদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আলোচনায় বসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। যেখানে হাসপাতালের দায়িত্বশীল সবাই উপস্থিত ছিলেন। এসময় অবস্থান কর্মসূচি থেকে সরে এসে আলোচনায় বসার জন্য একাধিকবার আহ্বান জানানো হয় অবস্থানরত স্বাস্থ্যকর্মীদের। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আহ্বানে তারা সাড়া দেননি। এতে ক্ষুব্ধ হন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা।
এ সময় তারা জানান, তাদের উদ্দেশ্য সৎ থাকলে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান করা যেতে পারে। তারা আলোচনায় আসতে চাইছে না কারণ তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু। তাদেরকে কারা ইন্ধন দিচ্ছে হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ অস্বাভাবিক করতে সেটা খুঁজে বের করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। একটা হাসপাতাল এরকম সিন্ডিকেটের পাল্লায় পড়ে বেআইনি কাজ করতে পারে না।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, ‘তাদের আন্দোলনের তোপে যদি তাদের পুনর্বাহলের সুযোগ দেওয়া হয়, সেটা হবে বেআইনি। এর জবাব মন্ত্রণালয়কে দিতে হবে কর্তৃপক্ষের। এরকম অন্যায় দাবি একবার মানা হলে, বারবার তারা সাহস পাবে। তারা এখন হাসপাতালের কেউ না, তারা কোন যুক্তিতে পদত্যাগ দাবি করে। পদত্যাগ চাইলে আমরা যারা হাসপাতালে আছি কর্মরত তারা চাইবো, এদের বিষয়টা এখন বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে যাচ্ছে।’
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমি চেয়েছিলাম যেন তাদের বুঝিয়ে যা করার শান্তিপূর্ণভাবে করা যায়। কিন্তু দিন দিন পরিস্থিতি ঘোলাটে করা হচ্ছে। আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের ডাক্তার ও স্টাফরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। রোগীদের সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। হাসপাতালের স্বাভাবিক পরিবেশ অস্বাভাবিক করা হচ্ছে। এখন আইনের সহায়তা নেওয়ার বিষয়টি চিন্তা করতেছি।’
সারাবাংলা/এমও
আন্দোলন রোগী সুনামগঞ্জ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্য কর্মী স্বাস্থ্য সেবা স্বাস্থ্যকর্মীদের আন্দোলন