‘এনজিও সরকার নয়, দরকার জনগণের সরকার’
২৫ আগস্ট ২০২৪ ২১:৫৮
ঢাকা: এনজিও সরকার নয়, বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম।
তিনি বলেন, ‘আগস্ট বিপ্লবের লক্ষ্য পূরণের জন্য আমরা এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সাহায্য-সহযোগিতা দেবো। কিন্তু তাদের বিপ্লবের মর্মবাণী উপলব্ধি করতে হবে। অবিলম্বে বিতর্কিত ব্যক্তিদের সরিয়ে যারা বিপ্লবে অংশগ্রহণ করেছে তাদের নিতে হবে। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের প্রয়োজন নেই। যারা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে, দুঃসময় চুপ থাকে আর বিজয়ের পরে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ায়, ওই ধরনের বুদ্ধিজীবীদের প্রয়োজন নেই। এনজিও সরকার নয়, বাংলাদেশে দরকার জনগণের সরকার।’
রোববার (২৫ আগস্ট) শেরে বাংলা নগরে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাফিজ বলেন, ‘যারা শেখ হাসিনাকে শক্তিশালী করেছে তারা কেউ যদি উপদেষ্টা পরিষদে থেকে থাকে, সরিয়ে দেন। প্রশাসনের যারা আছে, সরিয়ে দেন। বিপ্লবকে নিজের গতিতে চলতে দেন। আপনারা কেউ ভাববেন না যে বিজয় অর্জিত হয়ে গেছে। পাশের দেশে বসে শেখ হাসিনা অনেক ষড়যন্ত্র করবে। সুতরাং আপনারা সজাগ থাকবেন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘২০ দিন অতিবাহিত হয়েছে। এখন পর্যন্ত মনে হয় না বিপ্লবীদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কেবল আসিফ নজরুল ছাড়া এই বিপ্লবে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে কাউকে দেখিনি। বিপ্লব কিন্তু সম্পূর্ণ হয় নাই, বিপ্লব থমকে আছে। পুলিশি স্টেট যারা নির্মাণ করেছে, যারা আয়নাঘরের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে, যারা আয়নাঘর নামে একটি নির্যাতনকারী টর্চার সেল বানিয়েছে, বহু আন্দোলনকারী, সাধারণ মানুষ ও বিরোধী দলের রাজনীতিকদের গুম করেছে, হত্যা করেছে— তারা বহাল তবিয়তে নিজ নিজ পদে এখনো আছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার উচিত ছিল সাংবাদিকদের সেখানে (আয়নাঘর) নিয়ে ঘুরিয়ে দেখানো কীভাবে তারা নিরীহ মানুষদের অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে। ওই আয়নাঘরের সৃষ্টিকারীদের কারও কিছু হচ্ছে না। একজনকে মাত্র গ্রেফতার করা হয়েছে।’
সেনাপ্রধানের উদ্দেশে হাফিজ বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে এমনভাবে রাখবেন, তারা জনগণের বিপক্ষে না দাঁড়ায়। যে ৪৮৭ জন এখানে (সেনানিবাস) আশ্রয় নিয়েছিলেন, অবিলম্বে তাদের তালিকা প্রকাশ করুন। বিপ্লব সফল করতে হলে এই দুর্বৃত্তদের দমন করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বিপ্লবের কয়েকদিন পরে একটি প্রতিবিপ্লব সংঘটিত করার চেষ্টা করা হয়েছে, যেটাতে মদত দিয়েছে কয়েকজন বিচারপতি এবং গোপালগঞ্জের সন্ত্রাসী দল। কীভাবে তারা এই সাহস দেখায়? তারা সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, সেনাবাহিনীকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমরা তাদের দৃষ্টান্তুমূলক শাস্তি দেখতে চাই, আমরা এই বিপ্লবের সফল পরিণতি দেখতে চাই।’
মেজর হাফিজ বলেন, ‘আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজকে অনুরোধ করব, বিজয়ের আনন্দে কেউ আত্মহারা হবেন না। আপনারা রাজপথে থাকুন। যেকোনো ধরনের প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা হলে ব্যর্থ করে দিন।’
সারাবাংলা/এজেড/টিআর