Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বন্যার্তদের জন্য গণত্রাণ: ছাত্রদের কাছে ৪ দিনে জমা সোয়া ৫ কোটি

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৬ আগস্ট ২০২৪ ০১:২৭

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গণত্রাণ কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে চলছে ত্রাণ সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার কাজ। ছবি: সারাবাংলা

দেশের পূর্ব, উত্তরপূর্ব, দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের ১১ জেলার ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে সেখানকার দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে (ঢাবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছে সহায়তা জমা হয়েছে প্রায় সোয়া পাঁচ কোটি টাকার। চার দিনেরও কম সময়ে এ পরিমাণ সহায়তা এসেছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ছাড়াও সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। সরাসরি এ অর্থ সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি অনেকেই সহায়তা দিয়েছেন অনলাইনেও।

রোববার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শারিরীক শিক্ষা কেন্দ্রের এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ সময় জানানো হয়, বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করে রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে মোট পাঁচ কোটি ২৩ লাখ তিন হাজার ৬০৩ টাকা ৬৮ পয়সা জমা হয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বন্যার্তদের তহবিলে। এর মধ্যে ১২টি খাতে ব্যয় হয়েছে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ টাকা।

প্রবল বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশের ১১ জেলায়। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের অস্থির এক সময়ে এই বিপর্যয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে সব শ্রেণিপেশার মানুষ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছেও তারা ছুটে গিয়েছেন ত্রাণের জন্য অর্থ সহায়তা করতে।

বন্যার্তদের প্রায় ৫০ হাজার পরিবারের জন্য এখন পর্যন্ত ত্রাণ পাঠিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ছবি: সারাবাংলা

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক লুৎফর রহমান, মিডিয়া ও কমিউনিকেশন উইংয়ের প্রধান রেজওয়ান আহম্মেদ রিফাত ও টিএসসিতে বন্যার্তদের অর্থ সহায়তা সংগ্রহ বুথের প্রধান সমন্বয়ক অদিতি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) থেকে শুরু করে রোববার বিকেল ৫টা পর্যন্ত টিএসসিতে নগদ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে চার কোটি ৩৯ লাখ এক হাজার ৬৯০ টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ সহায়তা জমা হয়েছে ৬২ লাখ ৯৪ হাজার ১২০ টাকা। আর ব্যাংকের মাধ্যমে ২১ লাখ সাত হাজার ৭৯৩ টাকা ৬৮ পয়সা পাঠিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

খরচের হিসাব তুলে ধরে জানানো হয়, ত্রাণসামগ্রী, জরুরি ওষুধ, ত্রাণসামগ্রী রাখার ব্যাগ ও স্বেচ্ছাসেবকদের খাবার কিনতে ৩০ লাখ ১২ হাজার ৯৭০ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ৯০০ টাকার খেজুর কেনা হয়েছে, মুড়ি কেনা হয়েছে চার লাখ ৩০০ টাকার। এছাড়া দুই লাখ এক হাজার ৫০ টাকার বিস্কুট, আড়াই লাখ টাকার চিনি ও দুই লাখ ৫২ হাজার ৮৪০ টাকার গুড় কেনা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের রাত ও দুপুরের খাবারের জন্য ৩৯ হাজার টাকা, পলিথিন কিনতে এক লাখ দুই হাজার ৫০০ টাকা, বস্তা কিনতে এক লাখ ৭৯ হাজার টাকা, রিকশা ও ভ্যান ভাড়া বাবদ ৬৫০ টাকা এবং দড়ি, কলম ও কার্টার কিনতে ৭৩০ টাকা খরচ করা হয়েছে। এ ছাড়া গাড়ির সঙ্গে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের আট হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।

ত্রাণ সংগ্রহের হিসাব-নিকাশ নিয়ে রোববার ব্রিফ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা। ছবি: সংগৃহীত

সমন্বয়ক রেজওয়ান রিফাত বলেন, আমরা গত কয়েকদিন ধরে গণত্রাণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি। আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৫০টি ট্রাক বন্যাকবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে। অনেকে একই ত্রাণ দেওয়ায় একটি প্যাকেজ তৈরিতে বিভিন্ন জিনিসের ঘাটতি দেখা যায়। ফলে সংগৃহীত টাকা থেকে সেগুলো কিনতে হয়েছে। তাছাড়া অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবকদের দুপুর ও রাতের খাবারের পেছনেও আমাদের খরচ হয়েছে। প্রতি ট্রাকে প্রথম দিকে ১০ জন করে স্বেচ্ছাসেবক পাঠানো হয়েছিল। পরে সেটি কমিয়ে পাঁচজন এবং বর্তমানে তিনজন করে পাঠানো হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বন্যাকবলিত এলাকায় বৃহস্পতিবার থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত ৫০টি ট্রাকে ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবারের জন্য ত্রাণ প্যাকেজ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে বিমান বাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে তিন হাজার প্যাকেজ হেলিকপ্টারে করে দুর্গম এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে। তিন লাখ ৯৯ হাজার ৫০০ টাকা নগদ সহায়তাও দেওয়া হয়েছে।

সারাবাংলা/টিআর

গণত্রাণ টপ নিউজ ত্রাণ সহায়তা বন্যাকবলিত বন্যায় ত্রাণ বন্যার্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর