লঘুচাপ পশ্চিমবঙ্গে, দেশে প্রভাব কাটবে সকালে
২৬ আগস্ট ২০২৪ ২১:৪১
ঢাকা: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ সুস্পষ্ট হয়ে ওঠায় শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সমুদ্রবন্দরগুলোকেও তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়েযেতে বলা হয়েছিল। আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ তথ্য বলছে, লঘুচাপটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশে বড় ধরনের প্রভাব ফেলার আশঙ্কা কেটে গেছে।
সোমবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাসের পর সতর্কবার্তাও জারি করা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম, পায়রা, মোংলা ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ লঘুচাপটি পশ্চিমবঙ্গের দিকে চলে গেছে।
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সারাবাংলাকে বলেন, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপটি সৃষ্টি হওয়ার পর ঘণীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়। এটি এখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে অবস্থান করছে। এটি বৃষ্টি হয়ে ভারতের স্থলভাগ অতিক্রম করে চলে যাবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতেও একই ধরনের তথ্য এসেছে লঘুচাপ নিয়ে। ভারতের আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আঞ্চলিক অধিকর্তা সোমনাথ দত্তের বরাত দিয়ে নিউজএইটিন জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে সৃষ্টি হওয়ার পর সুস্পষ্ট হয়ে নিম্নচাপটি গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের ওপর অবস্থান করছে। উত্তর ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডের দিকে এটি যাবে।
খবরে বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সাত জেলায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ভারী বৃষ্টি হতে পারে আরও আট জেলায়। এ ছাড়া মঙ্গলবার দিনভর পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। কলকাতাসহ বাকি জেলাগুলোতে বজ্রসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টি আর ঝড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস রয়েছে বাংলাদেশেও। আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি সাবধানে চলাচল করতে বলা হয় সতর্কবার্তায়।
লঘুচাপের পাশাপাশি মৌসুমি বায়ুও এখনো সক্রিয় বাংলাদেশের ওপর। সোমবার সন্ধ্যায় জারি করা নিয়মিত আবহাওয়ার পূর্বাভাসেও তাই ঝড়-বৃষ্টির ইঙ্গিত রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। দেশের সবগুলো বিভাগের জন্যই এমন ঝড়-বৃষ্টির আভাস দেওয়া হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক জানালেন, বাংলাদেশের জন্য এই লঘুচাপ থেকে কোনো ধরনের শঙ্কা নেই। তিনি বলেন, লঘুচাপের প্রভাবে ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতার কারণে সমুদ্রবন্দরগুলোতে সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। রাতে ঝড়ো হাওয়া থাকতে পারে। সকাল নাগাদ সতর্ক সংকেত তুলে নেওয়া হতে পারে।
এদিকে দেশের বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বৃষ্টিপাত অনেকটাই কমে এসেছে। সেই সঙ্গে সঙ্গে কমেছে ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল। এতে অনেক এলাকাতেই বন্যার পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। বন্যায় সবচেয়ে বেশি দুর্গত ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো থেকে নেমে গেছে পানি। তবে বন্যার ক্ষত এখনো এসব এলাকায় দগদগে।
সারাবাংলা/টিআর
আবহাওয়া অধিদফতর বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ লঘুচাপ সমুদ্রবন্দরে সতর্ক সংকেত