ইবির উপাচার্যপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়
২৮ আগস্ট ২০২৪ ০৯:১২
ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য পদে নিয়োগ পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন কয়েকজন শিক্ষক। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত শিক্ষকের নাম জানা গেছে। তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে বিভিন্ন চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম, দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারী, মাতলামি সহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
আলোচনায় থাকা শিক্ষকরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন এবং লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিনুর রহমান, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যপদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানূর রহমান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. নজিবুল হক, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন এবং আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপাচার্য হওয়ার দৌঁড়ে থাকা সবাই বিএনপিপন্থি। এদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিজ দলের মধ্যে ভাঙন, মদ্যপান করে উলঙ্গ অবস্থায় মাতলামি, নারী কেলেঙ্কারি, আওয়ামী সরকারের আমলে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা রেখে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ, কপি-পেস্ট করে বই ছাপানো, ভুয়া পিএইচডি করানো, ডায়েরি থেকে জিয়াউর রহমানের নাম বাদ দেওয়া, মাদরাসা সেকশন থাকাকালীন দুর্নীতি ও অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ সহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, নিয়োগ বাণিজ্য ও নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এমন শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে চান না শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা জানান, নিয়োগ বাণিজ্য, নারী কেলেঙ্কারি, অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এমন কাউকে আমরা ইবির উপাচার্য হিসেবে চাই না। ক্লিন ইমেজের একজন শিক্ষককে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হোক। আর দলীয় ও রাজনৈতিক পরিচয় নয় বরং শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও প্রশাসনিক দক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষার্থীবান্ধব শিক্ষককে আমরা উপাচার্য হিসেবে প্রত্যাশা করি।
গত শনিবার (২৪ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ উপাচার্য হয়েছে এমন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্টে ছেয়ে যায়। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তবে বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে রোববার (২৫ আগস্ট) সৎ, যোগ্য ও দক্ষ উপাচার্যদের মধ্য থেকে অতি দ্রুত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানিয়েছে শিক্ষক সমিতি।
এক বিবৃতিতে সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়৷ বিজ্ঞপ্তিতে অন্তবর্তীকালীন সরকারকেও অভিনন্দন ও সহায়তা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘অবশ্যই দক্ষতা সম্পন্ন ক্লিন ইমেজের একজন শিক্ষককে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। যিনি শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষাকে বুঝতে পারবেন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবেন। আর উপাচার্য হোক শিক্ষার্থীদের জন্য, যেন কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী না হয়।’
সারাবাংলা/এনইউ