নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগে দায়মুক্তির বৈধতা প্রশ্নে রুল
২৭ আগস্ট ২০২৪ ১৩:১৩
ঢাকা: ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনার (ইসি) নিয়োগ নিয়ে দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না বলে ৯ ধারায় প্রদত্ত এই দায়মুক্তি দেওয়ার বৈধতা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবং নির্বাচন কমিশনারদের (ইসি) নিয়োগ নিয়ে দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না বলে যে দায়মুক্তি দেওয়া হয়েছিল সেটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করা হয়। গত ১৮ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন।
রিটকারী আইনজীবীরা হলেন- আব্দুল্লাহ সাদিক, জিএম মোজাহিদুর রহমান, মিসবাহ উদ্দিন, জোবায়দুর রহমান, নোয়াব আলী, আজিম উদ্দিন পাটোয়ারী, সাজ্জাদ সরওয়ার, মোজাহিদুল ইসলাম, মিজানুল হক এবং একেএম নুরুন নবী।
রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার আইন ২০২২ এর ধারা ৯ চ্যালেঞ্জ করা হয়।
৯ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগদানের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক ইতোপূর্বে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি ও তৎকর্তৃক সম্পাদিত কার্যাবলি এবং উক্ত অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারের নিয়োগ বৈধ ছিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং উক্ত বিষয়ে কোনো আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাইবে না।
রিটের পর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছিলেন, এই আইনের ধারা ৯ এর মাধ্যমে ইতোপূর্বে নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং এ ব্যাপারে বিচার বিভাগের ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছে, যা সংবিধানের ২৬, ২৭ এবং ৩১ অনুচ্ছেদ, ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী।
এই আইনের ধারা ৯ এর মাধ্যমে বিচারবিভাগের ক্ষমতা কেঁড়ে নেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, দেশের কোনো আদালতে প্রশ্ন উত্তাপন করা যাবে না। এই ধরনের দায়মুক্তি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক।
দেশের তিনটি বিভাগ রয়েছে। আইন-বিচার ও সংসদ বিভাগ। আইন সভা আইন পাশ করে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে না। কারণ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো। ৯ ধারার মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে।