Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তদন্তে জাতিসংঘকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৮ আগস্ট ২০২৪ ০১:২৫

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের তিন প্রতিনিধি মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে। ছবি: পিআইডি

ঢাকা: ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আন্দোলনের সময় সংঘটিত অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের তদন্ত করছে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন। এ তদন্তে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার কার্যালয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয়ের (ওএইচসিএইচআর) তিন প্রতিনিধি সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাৎ শেষে ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনের শুরু থেকে সরকার পতন পর্যন্ত সময়ে যা কিছু ঘটেছে, তার স্বাধীন, পূর্ণাঙ্গ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন সেই কাজটি করবে। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

ওএইচসিএইচআরে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রোরি মুংগোভেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মানবাধিকারবিষয়ক কর্মকর্তা লিভিয়া কোসেনজা ও আলেক্সান্ডার জেমস আমির এল জুন্ডি।

পরে ব্রিফিংয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রেকর্ডসংখ্যক সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। ভবিষ্যতেও যেন এই হার বহাল থাকে বা এক নম্বর অবস্থান অক্ষুণ্ণ থাকে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলকে অনুরোধ করেছি। প্রতিনিধি দল জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশিদের কাজের ভূঁয়সী প্রশংসা করেছে।

এর আগে বাংলাদেশের কোটা সংস্কার ও সরকার পতনের আন্দোলনে সংঘটিত অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো তদন্তে সরকারের সহায়তা কামনা করেন মুংগোভেন। বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রকৃত তথ্য-প্রমাণসহ আনুষঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে।

এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সহায়তা সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন মুংগোভেন। ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত কার্যক্রম শুরু হলে যেন এসব তথ্য-প্রমাণ সঠিকভাবে সরবরাহ করা হয়, সে বিষয়েও গুরুত্ব সহকারে নজর দিতে আহ্বান জানান তিনি।

গত ১ জুলাই শাহবাগ অবরোধ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ক্রমেই এ আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। ১৬ জুলাই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ঢাকা, রংপুর ও চট্টগ্রামে ছয়জন নিহতও হন।

এরপর আর আন্দোলন দমিয়ে রাখা যায়নি। সারা দেশে যেমন আন্দোলনের তীব্রতা বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে সংঘর্ষ-সংঘাত ও প্রাণহানি। শেষ পর্যন্ত ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি থেকে সরকার পতনের এক দফা দাবি জানানো হয়। একদিন পর ৫ আগস্ট দুপুরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

১৬ ‍জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় এবং সরকার পতনের পরের কয়েকদিনে সারা দেশে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। সঠিক সংখ্যা এখনো জানা না গেলেও এখন পর্যন্ত সহস্রাধিক প্রাণহানির খবর উঠে এসেছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক এক প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ আন্দোলন ঘিরে সাড়ে ছয় শতাধিক প্রাণহানির তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। আন্দোলনে অন্যায্যভাবে বলপ্রয়োগের প্রমাণ মিলেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

সার্বিক বিষয়ে পূর্ণ তদন্ত করতেই এবার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গঠন করেছে জাতিসংঘ।

সারাবাংলা/টিআর

ওএইচসিএইচআর জাতিসংঘ টপ নিউজ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন মানবাধিকারবিষয়ক কার্যালয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর