যৌতুক মামলায় জেলহাজতে ইবি শিক্ষক
২৯ আগস্ট ২০২৪ ১৮:২০
কুষ্টিয়া: যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারকে। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক।
বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) নাটোর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারর মোহাম্মদ আবদুর রহিম অভিযুক্তের জামিন না মঞ্জুর করে এই আদেশ দেন।
তার স্ত্রী জয়া সাহার দায়েরকৃত ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (গ) ও ৩০ ধারায় করা মামলার প্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের (বাদীপক্ষ) আইনজীবী আনিসুর রহমান।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আট বছর আগে সঞ্জয় ও জয়ার বিয়ে হয়। এ সময় বাদীর (জয়া) কল্যাণের কথা চিন্তা করে তার বাবা নগদ ২৫ লাখ টাকা, ২০ ভরি স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ প্রয়োজনীয় যাবতীয় ফার্ণিচার দেয় সঞ্জয়কে। তবে বিয়ের পর থেকেই তাদের উভয়ের মধ্যে মনোমালিন্যের কারণে জয়া সাহা বিভিন্ন সময় তার স্বামী সঞ্জয় সরকার দ্বারা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন।
একইসঙ্গে জয়াকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর শুরু করে সঞ্জয়। গত বছরের জুনে আবারও ১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। পরে জয়া টাকা আনতে অপারগতা জানালে তাকে ও তার সাড়ে চার বছরের শিশু সন্তানকে শ্বশুরবাড়ি রেখে আসে সঞ্জয়। তারপর থেকে উভয়েই একবছরের বেশি সময় আলাদা থাকছেন।
জানা গেছে, মামলার বাদী জয়া সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের স্মাতক ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি নাটোরের উপরবাজার উপজেলার রতন কুমার সাহার বড় কন্যা। এদিকে সঞ্জয় কুমার পাবনা জেলার চড়াডাঙ্গা গ্রামের সুশান্ত কুমার সাহার পুত্র।
সঞ্জয় কুমার সরকারের আইনজীবী শাহজাহান কবীর বলেন, ‘আদালত তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আশা করি তিনি জামিন পাবেন। আমরা আগামী শুনানিতে (রবিবার) তার জামিনের জন্য আবারও চেষ্টা করব।’
রাষ্ট্রপক্ষের পক্ষের আইনজীবী আনিসুর রহমান বলেন, ‘এ মামলাটি দাখিলের পর মামলাটির জুডিশিয়াল তদন্ত হয়। তদন্ত শেষে ম্যাজিস্ট্রেট বাদীর (জয়া সাহা) রিপোর্ট দেয়। পরে আসামীর (সঞ্জয় সরকার) বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট হলে আসামী গত একমাস আগে আপোষের কথা বলে জামিন নেয়। কিন্তু আপোষ না করার কারণে আজ আদালত এ নির্দেশ দেয়।’
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ভিসির কাছে ড. সঞ্জয় কুমার সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের গভীর রাতে মেসেজ দেয়া ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ করেন এক ছাত্রী। এ ঘটনায় তৎকালীন ভিসি ড. সঞ্জয় কুমারকে তিরস্কার ও সতর্ক করেন। অভিযোগের পেছনে হাত থাকার সন্দেহে বিভাগে এক শিক্ষার্থীকে রুমে ডেকে হুমকি দেন ড. সঞ্জয়।
এ ছাড়া সন্দেহভাজন ওই শিক্ষার্থীকে দু’টি কোর্সে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে তার বিরুদ্ধে। সঞ্জয়ের নির্যাতন ও মানসিক চাপের কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন ওই ছাত্রী। পরে এ ঘটনায় তদন্ত শেষে সঞ্জয়কে ওই ছাত্রীর সকল কোর্স থেকে সাসপেন্ড করা হয়।
সারাবাংলা/একে