ঢাকা: সংখ্যালঘু শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানোর প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ। এক্ষেত্রে এ রকম ঘটনা বন্ধের পাশাপাশি দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তি চাওয়া হয়েছে। শনিবার (৩১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে তারা এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চলতি বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে সারাদেশে সংখ্যালঘু তথা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংস অত্যাচার, লুটপাট, নারীর শ্লীলতাহানি, মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। সারাদেশে কয়েকজন সংখ্যালঘু হত্যার ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে শিক্ষকদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত এবং মানসিকভাবে অপদস্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর পরিচালিত সহিংস নির্যাতনে জড়িতদের চিহিৃত করে তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, বিশিষ্ট আইনজীবী ও মানবাধিকার আন্দোলনের নেতা অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্তের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের করায় বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানানোর পাশাপাশি দ্রুত মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
এ সময় ফরিদগঞ্জ গল্লার আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাস বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে একদল হামলাকারী আমার বাড়িতে হামলা করে।’
তিনি বলেন, ‘আমার দুটি মোটরসাইকেল, পানির মোটরে আগুন লাগিয়ে দেয়। তারপর সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যায়। তারা দেড় দুই ঘণ্টা ধরে লুটপাট করে। এখন আবার আমাকে অধ্যক্ষ পদ থেকে পদত্যাগের হুমকি দিচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ২০২০ সালে অধ্যক্ষ পদে জয়েন করি। আমার নামে কখনো কোনো দুর্নাম হয়নি।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বর্তমান ছাত্ররা আমার পদত্যাগ চায় না। পাস করে যাওয়া ছাত্ররা আমার পদত্যাগ চাচ্ছে।’
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক সজীব সরকার বলেন, ‘স্কুল কলেজ তো রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মধ্যে আসেনি। এরা তো বিবিএস নিবন্ধনের মাধ্যমে এসেছে। তাহলে এদেরকে কেনো পদত্যাগ করতে হবে। অবিভাবকদের যদি আমরা সম্মান করতে না পারি তাহলে আমাদের এ শিক্ষার প্রয়োজন নেই। এ বিষয়ে আমি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী স্বর্ণা রানী দে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী সোহাগ অধিকারী, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির জয়িতা বিশ্বাস, সাধারণ শিক্ষার্থী লিংকন দত্ত, বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক দিপংকর চন্দ্রশীল এবং সমন্বয়ক জয় রায়।