Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১১ জেলায় এখনও ৭ লাখ পরিবার পানিবন্দি, মৃত ৫৯

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩১ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৪৩

ফাইল ছবি

ঢাকা: সম্প্রতি বন্যায় দেশের ১১ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সব জেলায় এখনও পানিবন্দি রয়েছেন ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৯৯৫টি পরিবার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫৪ লাখ ৫৭ হাজার ৭০২ জন।

শনিবার (৩১ আগস্ট) দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, বন্যায় দেশের মোট ১১ টি জেলার ৬৮ টি উপজেলার ৫০৪টি ইউনিয়ন/পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলাগুলো হলো: ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এর মধ্যে চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ সিলেট, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলার বন্যা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক। মৌলভীবাজার ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। বন্যায় ৫৯ জন মারা গেছেন। এরমধ্যে পুরুষ ৪১ জন, মহিলা ৬ জন, শিশু- ১২ জন। মৃতদের মধ্যে কুমিল্লা ১৪ জন, ফেনী ২৩ জন, চট্টগ্রাম ৬ জন, খাগড়াছড়ি ১ জন, নোয়াখালী ৯ জন, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ১, লক্ষীপুর ১ ও কক্সবাজার ৩ জন, মৌলভী বাজার ১ জন। আর ১ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

পানিবন্দি/ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় দিতে জন্য মোট ৩ হাজার ৯২৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মোট ৩ লাখ ৯৩ হাজার ৩০৫ জন লোক এবং ৩৬ হাজার ১৩৯টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা সেবা দিতে মোট ৫১৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের এ পর্যন্ত ত্রাণ দেওয়া হয়েছে, ৪ কোটি ৫২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে নগদ, ২০ হাজার  ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, ৩৫ লাখ টাকার শিশু খাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়। বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে।

এদিকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের মাধ্যমে সংগৃহীত মোট ১ লাখ ৪০ হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, কাপড় ও পানি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর (ডিডিএম) এর মাধ্যমে বন্যা কবলিত এলাকায় পাঠানো হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শুক্রবার লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালী জেলার বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

বন্যা আক্রান্ত জেলার জেলা প্রশাসককে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সাথে সমন্বয় করে এক সাথে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

এছাড়া বন্যা দুর্গত জেলাসমূহের দূরবর্তী স্থানসমূহে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যেম ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহে স্বাস্থ্য সেবা দিতে ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিয়েছেন।

সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক বন্যা দুর্গত এলাকায় ২,৩৬,৩২৮ প্যাকেট ত্রাণ, ২০,৪১০ প্যাকেট রান্না করা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। মোট ৪২ হাজার ৮১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ২৩ হাজার ৫৭০ জনকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে ১৫৩ জনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়েছে।

সশস্ত্রবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত মোট ২৪ টি ক্যাম্প এবং ১৮টি মেডিক্যাল টিম বন্যা উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসা সেবা দিয়েছে। এছাড়া খাবার পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, কাপড়, ঔষধ, বেবি ফুড, স্যানিটারী আইটেম ইত্যাদি বিতরণ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে দেশের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্র থেকে লোকজন নিজ নিজ বাড়িঘরে ফিরছেন। বন্যা দুর্গত জেলাগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়েছে।

বন্যা পরবর্তী পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব রোধ করতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে।এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে কন্ট্রোল রুম সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

সারাবাংলা/জেআর/একে

বন্যা বন্যা দুর্গত এলাকা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর