Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাধ্যমিকে ফিরছে বিভাগ বিভাজন, নতুন শিক্ষাক্রম ২০২৫ সালে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৯

 

ঢাকা: দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। গত কয়েক বছর ধরে যেসব পরিবর্তন এসেছে, বদলে যাবে তার প্রায় সবই। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগ বিভাজন ফিরবে আগের মতো। শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি ২০১২ সালের প্রচলিত পদ্ধতির কাছাকাছি অবস্থায় ফিরবে। একই সঙ্গে পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকও পরিমার্জন হবে।

রোববার (১ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হয়েছে। সবশেষ ২০২২ সালে প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় উল্লেখ করে এতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে সব অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা বাস্তবায়ন শুরু হবে ২০২৬ সাল থেকে।

পরিপত্র অনুযায়ী, আগামী বছরেই মাধ্যমিক পর্যায়ে আগের মতো বিভাগ বিভাজন (বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য) ফিরে আসবে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৬ সালের অনুষ্ঠেয় পরীক্ষা) নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রাখা হবে। তাদের আগের ২০১২ সালের জাতীয় শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত বই) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী প্রণীত শাখা— বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এই পাঠাপুস্তকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যেন শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচি শেষ করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুযায়ী পরিচালনা করা হবে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে তাদের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২-এর আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) দেওয়া হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে।

পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তনের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে পরিপত্রে। এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে। এ ক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে। যতদূর সম্ভব মূল্যায়ন পদ্ধতি আগের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২-এর মতো হবে।

ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণির বই প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, এসব শ্রেণিতে চলমান পাঠ্যপুস্তকগুলো ২০২৪ সালে বাকি সময়েও বহাল থাকবে। ২০২৫ সালে তাদের যথাসম্ভব সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে।

নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে মূল্যায়ন পদ্ধতি প্রসঙ্গে পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের অবশিষ্ট সময়ে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে।

এ ক্ষেত্রে শ্রেণি কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রতিটির অসম্পন্ন থাকা ছয়টি করে বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম আর অব্যাহত রাখা হবে না। সংশোধিত ও পরিমার্জন করা মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে ডিসেম্বর নাগাদ ২০২৪ সালের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে হবে। সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতির রূপরেখাও শিগগিরই বিদ্যালয়গুলোয় পাঠনো হবে।

আগামী বছর নতুন শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করার কথাও বলা হয়েছে পরিপত্রে। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে। নতুন শিক্ষাক্রম ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর করা হবে।

২০২২ সালের শিক্ষাক্রম বাতিল করা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২-এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানা বাস্তব কারণে ওই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে প্রতীয়মান।

এর পরিপ্রেক্ষিতেই সার্বিক বিবেচনায় শিক্ষাক্রম, পাঠ্যক্রম, পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার এ নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সারাবাংলা/টিআর

এসএসসি পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যক্রম পাঠ্যপুস্তক বই মুদ্রণ বিভাগ বিভাজন মাধ্যমিক মূল্যায়ন পদ্ধতি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর