ব্যাটারিচালিত মোটরযানের গতিসীমা নির্ধারণ করতে হাইকোর্টের রুল
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৫০
ঢাকা: সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত রেজিস্টেশনবিহীন ব্যাটারিচালিত যানবাহনের (ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক রিকশা, ভ্যান এবং অন্যান্য দুই বা তিন চাকার বাহন) সর্বোচ্চ গতিসীমা কেন নির্ধারণ করে দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব মোটরযান চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব এবং ব্যারিস্টার ইন্তেখাব উল আলম।
রুলে মোটরযান আইন অনুযায়ী সড়ক-মহাসড়কে চালিত সকল যানবাহন (ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক রিকশা, ভ্যান এবং অন্যান্য দুই বা তিন চাকার গাড়ি) চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে চলাচলের সময় এসব যানবাহনের লাইট, ইন্ডিকেটর লাইট, হর্ন, স্পিডোমিটার ও ব্রেক কেন সচল রাখা হবে না এবং আইন লঙ্ঘনের জন্য কেন শাস্তি আরোপ করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাটারিচালিত এসব যানবাহনের জন্য সর্বোচ্চ গতিসীমা কেন নির্ধারণ করে দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। চার সপ্তাহের মধ্যে সড়ক পরিবহন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে, গত জুলাই মাসে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জনস্বার্থে এ বিষয়ে রিট দায়ের করেন ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব এবং ব্যারিস্টার ইন্তেখাব উল আলম।
আদেশের পর ব্যারিস্টার নাজমুল হাসান রাকিব বলেন, সড়ক-মহাসড়কে চলাচলরত রেজিস্ট্রেশনবিহীন ব্যাটারিচালিত যানগুলো এলাকাভিত্তিক চলাচল সীমাবদ্ধ রাখলেও এ সকল রেজিস্ট্রেশনবিহীন মোটরযানগুলোর ফিটনেস, লাইট, হর্ন, ব্রেক সম্পর্কিত কোন নির্দেশনা নাই। যার ফলে যেকোন রিকশা/ভ্যানের সঙ্গে মটর লাগিয়েই মোটরযান হিসেবে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেগুলো সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এবং সড়ক পরিবহণ বিধিমালা- ২০২২ এ প্রদত্ত লাইট, হর্ন, ব্রেক ও ফিটনেস সম্পর্কিত কোনো নিয়মই মেনে চলে না। উপযুক্ত ব্রেক না থাকায় প্রতিদিনই অসংখ্য দুর্ঘটনা ঘটছে। ইচ্ছেমতো এলইডি লাইট ব্যবহার করায় রাতে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্যান্য যানবাহনেরও সমস্যা হচ্ছে। সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হচ্ছে- এসব রেজিস্ট্রেশনবিহীন যানগুলো যারা চালাচ্ছে তাদের কারোরই ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। কারও কারও বয়স ১০-১২ বছর। তারা জানেই না সড়ক বা মহাসড়কে যানবাহন চালানোর নিয়ম। ট্রাফিক আইন না জানায়, রোড সিগনাল না চেনায়, যত্রতত্র গাড়ি চালিয়ে দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। এতে করে যেমন বৈদ্যুতিক মোটরযানগুলোর যাত্রীরা হতাহত হচ্ছেন, তেমনি রাস্তায় অন্যান্য মানুষও হতাহত হচ্ছেন। এবং অন্যান্য যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এছাড়া, রেজিস্ট্রেশনবিহীন, ফিটনেসবিহীন এসব যানবাহনগুলো রাস্তায় অন্যান্য মোটরযানগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেই একই স্পিডে চালানোর চেষ্টা করছে। ফিটনেসবিহীন মোটরযানগুলোর অতিরিক্ত গতির জন্য ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেশি হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রেজিস্ট্রেশনবিহীন এসব ব্যাটারিচালিত মোটরযানগুলো কোনো রকম নিয়মনীতি না মেনেই চালানো হচ্ছে। যেগুলো নিয়ন্ত্রনের কোনো ব্যবস্থাই নাই। তাই রেজিস্ট্রেশনবিহীন এসব মোটরযানগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য জনস্বার্থে এই রিট দায়ের করা হয়েছে। আজ শুনানি নিয়ে চার সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত।
সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ