Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রাম চেম্বার থেকে সরলো ‘পরিবারতন্ত্রের’ বোঝা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:৩৮

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি ওমর হাজ্জাজ পদত্যাগ করেছেন। এর আগে প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র সহ-সভাপতি, সহ-সভাপতি ও ২১ জন পরিচালক পদত্যাগ করেন। ফলে চেম্বারের ২৪ সদস্যের পুরো পর্ষদই ভেঙে গেল।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ওমর হাজ্জাজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে তার পদত্যাগপত্র পাঠান বলে নিশ্চিত করেছেন চেম্বার সচিব।

ওমর হাজ্জাজ আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য এম এ লতিফের ছেলে। একই পর্ষদে ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের ভাই-মেয়েও। লতিফ-মাহবুবসহ কয়েকজন মিলে চট্টগ্রাম চেম্বারকে পারিবারিকভাবে কুক্ষিগত করে রেখেছেন বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চেম্বার নেতাদের পদত্যাগের দাবিতে বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছেন।

শেষ পর্যন্ত ওমর হাজ্জাজসহ পুরো পর্ষদের বিদায়ের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম চেম্বার পরিবারতন্ত্রের কবলমুক্ত হলো বলে মনে করছেন বঞ্চিত ব্যবসায়ীরা।

চেম্বার সূত্র জানিয়েছে, দুই সহ-সভাপতি ও ২১ পরিচালকের পদত্যাগের পর সভাপতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সচিব ও প্রধান নির্বাহী মো. ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘চেম্বারের সম্পূর্ণ পর্ষদ সোমবার পদত্যাগ করেছেন। আমরা পদত্যাগপত্রগুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।’

চেম্বারের কীভাবে পরিচালনা হবে জানতে চাইলে ফারুক বলেন, ‘একটা শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এরকম আগে কখনও হয়নি। পুরো পর্ষদ পদত্যাগের ঘটনা এটাই প্রথম। চেম্বারের গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি কাজগুলো করতে এখন একজন প্রশাসক প্রয়োজন। তাই আইন অনুযায়ী তারা (মন্ত্রণালয়) হয়তো প্রশাসক নিয়োগ করবেন। এটা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টিও বিভাগ পদত্যাগপত্র রিসিভ করার পর তারা সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি বলেন, ‘এখন যেহেতু কোনো বোর্ড নেই, সেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চিটাগং চেম্বারের সমস্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। যতদ্রুত সম্ভব একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করে চিটাগাং চেম্বার তার আগের পরিচয় ফিরে পাক সেটাই আমাদের সবার চাওয়া।’

চট্টগ্রাম চেম্বারে ২০২৩-২৫ মেয়াদের ২৪ সদস্যের পুরো পর্ষদের সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। এ পর্ষদে এম এ লতিফের ছেলে ওমর হাজ্জাজ সভাপতি ও ওমর মুক্তাদির পরিচালক হয়েছিলেন। এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের মেয়ে রাইসা মাহবুব সহ-সভাপতি এবং ভাই আলমগীর পারভেজ চেম্বারের পরিচালক হয়েছিলেন।

এ ছাড়া কমিটিতে পরিচালক হয়েছিলেন নির্বাচনি বোর্ডের প্রধান নুরুন নেওয়াজ সেলিমের মেয়ের জামাই বেনাজির চৌধুরী নিশান ও ছেলে মোহাম্মদ সাজ্জাদ উন নেওয়াজ। দীর্ঘদিন ধরেই ঘুরে ফিরে নির্ধারিত কয়েকজন ব্যবসায়ী সে বলয়ে থেকে পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল ব্যবসায়ীদের।

গত ১৮ আগস্ট সকালে নগরীর আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের চেম্বার কার্যালয়ের সামনে বৈষম্যের শিকার ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ সমাবেশ মানববন্ধন করেন। গত ৫ আগস্ট দেশে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর চেম্বার ঘিরে ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। ব্যবসায়ীদের বঞ্চিত করে ‘পরিবারতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করার অভিযোগে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে আসছিলেন তারা।

এ পরিস্থিতিতে গত ২৮ আগস্ট চেম্বারের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন ও পরিচালক জহিরুল ইসলাম চৌধুরী পদত্যাগ করেন। ১১৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী এ চেম্বার থেকে পুরো পরিচালনা পর্ষদ পদত্যাগের ঘটনা এটিই প্রথম।

সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ পরিবারতন্ত্র


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর