Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চিকিৎসকদের কর্মসূচি প্রত্যাহার, সব হাসপাতালে চলবে পূর্ণ সেবা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৬

অবহেলায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগে চিকিৎসকদের মারধর ও পরে চিকিৎসকদের কর্মবিরতি ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢামেক হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সোমবার সকালে ঢামেকের জরুরি বিভাগের সামনের চিত্র। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ ও নিজেদের দাবিদাওয়া নিয়ে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন চিকিৎসকরা। চার দাবির মধ্যে দুটি এরই মধ্যে আংশিক পূরণ হওয়ায় ও বাকি দুটি সচিব পূরণের আশ্বাস দিলে চিকিৎসকরা সব ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছেন।

সচিবের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢামেকের প্রশাসনিক ব্লকে এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় চিকিৎসকরা দেশের সব হাসপাতালে ফের পূর্ণ মাত্রায় সেবা চালুর ঘোষণা দেন।

আন্দোলনরত চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারি বিভাগের ডা. আব্দুল আহাদ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আজ (মঙ্গলবার) বিকেল ৫টায় সর্বস্তরের চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠকে পূর্বনির্ধারিত চারটি দাবির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।

ডা. আব্দুল আহাদ জানান, প্রথম দুটি দাবি বিষয়ে এরই মধ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ঢামেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। যেসব হাসপাতাল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এখনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন হয়নি, সেসব স্থানে দ্রুত বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বৈঠকে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, আমরা আশাবাদী, শিগগিরই এই দাবিগুলো বাস্তবায়িত হবে এবং স্বাস্থ্য সেবার পরিবেশ আরও নিরাপদ হবে। স্বাস্থ্য পুলিশ গঠন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন প্রণয়নের আরও দুটি দাবি আমাদের ছিল। সেগুলো নিয়ে দীর্ঘ ও তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। এসব দাবি পূরণের লক্ষ্যে একটি কার্যকর কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ঢামেকের এই চিকিৎসক আরও বলেন, এ ছাড়াও স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন অসঙ্গতি, যেমন— ক্যাডার বৈষম্য ও রেফারেল সিস্টেমের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা আমাদের দাবিগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছেন। সিনিয়র স্বাস্থ্য সচিবের ভাষ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন’ নিয়ে পূর্ববর্তী খসড়ার আলোকে আরও তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় চেয়েছে। এই সময়ের ভেতরে পূর্ববর্তী স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনের খসড়ার অসঙ্গতিগুলো নিয়ে তারা আলোচনা করবেন এবং আরেকটি খসড়া ওয়েবসাইটে প্রকাশিত করবেন। চিকিৎসক সমাজ আলোচনা-পর্যালোচনা করে সেই খসড়ার ওপরে কোনো সংশোধনী থাকলে তাদের পক্ষ থেকে মতামত পেশ করবেন। এরপর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে পরিবর্তিত ও পরিমার্জিত ‘স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইন’ ফরওয়ার্ডিং দিয়ে দেওয়া হবে আইন হিসেবে পাস করানোর জন্য। স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়েও উনারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ফরওয়ার্ডিং দিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে দ্রুততম সময়ে পদক্ষেপ নেবেন।

কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে ডা. আহাদ বলেন, সরকারের এসব দৃশ্যমান পদক্ষেপ ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা সব হাসপাতালে পূর্ণ সেবা পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিচ্ছি।

আন্দোলনে পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান স্যার, অধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুল আলম স্যার, হাসপাতাল প্রশাসন, দেশের সর্বস্তরের চিকিৎসক, রেসিডেন্ট ও ট্রেইনি ডাক্তার, ইন্টার্ন চিকিৎসক, মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান ডা. আহাদ। পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতিও চিকিৎসকরা কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর

কর্মসূচি প্রত্যাহার চিকিৎসকদের কর্মসূচি টপ নিউজ ঢামেক হাসপাতাল সচিবের সঙ্গে বৈঠক স্বাস্থ্য সচিব


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর