Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এখনো আতঙ্ক কুতুবদিয়া পাড়ায়, কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কায় শুঁটকি মহাল

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:০৫

কক্সবাজার পৌরসভার সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ। সারাবাংলা ফাইল ছবি

কক্সবাজার: কক্সবাজার পৌরসভার সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়ার মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষ ও সংঘাতের আতঙ্কা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি দুই এলাকার বাসিন্দারা। এ পরিস্থিতিতে কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দাদের সমিতিপাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে না দেওয়ার অভিযোগ মিলেছে। কক্সবাজার শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ হওয়ায় এখন বিপাকে পড়েছেন কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দারা। শুঁটকি মহালের জন্য বিখ্যাত এই এলাকাটিতে শুঁটকি ব্যবসাতেও কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

বিজ্ঞাপন

ফুটবল খেলা ঘিরে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সমিতিপাড়া ও কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দাদের মধ্যে দিনভর দফায়-দফায় হামলা ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় অন্তত ছয় ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ রাখা হয়। অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। দিনভর সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়ার তথ্য পাওয়া যায়। দিন শেষে সেনাবাহিনী হাজির হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলেও এলাকাবাসীর আতঙ্কের ঘোর কাটেনি।

কুতুবদিয়া পাড়া থেকে যাতায়াতের একমাত্র পথ সমিতিপাড়া দিয়ে গেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেই পথ দিয়ে যাতায়াতের সময় বাধা দেওয়া, হামলা ও মারধরের চেষ্টা করছেন সমিতিপাড়ার বাসিন্দারা। এতে কুতুবদিয়া পাড়ার প্রায় ৪০ হাজার বাসিন্দাকে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে সময় পার করতে হচ্ছে। হুমকি-ধমকি ও হামলার আশঙ্কায় ‘অনিরাপদ’ সময় কাটছে তাদের। পাশাপাশি দেশের সবচেয়ে বড় শুঁটকি মহাল নাজিরারটেকেরও বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

দুই এলাকার সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছিলেন। সেই সংঘর্ষের জেরে এখনো আতঙ্ক কাটেনি এলাকাবাসীর। সারাবাংলা ফাইল ছবি

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, এরই মধ্যে তাদের ছয় থেকে সাত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অন্যদিকে শুঁটকি কেনা ও ভ্রমণের উদ্দেশে ওই এলাকায় যাওয়া পর্যটকদেরও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

কুতুবদিয়া পাড়ার বাসিন্দা জসিম উদ্দিন বলেন, সমিতিপাড়ায় সড়ক পথে গতিরোধ করে হামলার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাকেন্দ্রসহ শহরে গুরুত্বপূর্ণ কাজে যেতে পারছে না এলাকাবাসী। এমনকি ওই পথ দিয়ে পর্যটকরাও দেশের বৃহৎ শুঁটকি মহালে যেতে পারছেন না। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলছেন, শুঁটকির গাড়ি ঢুকতে না দেওয়ায় মজুত করা শুঁটকি নষ্ট হচ্ছে। দুই দিনে তাদের ছয় থেকে সাত লাখ টাকার শুঁটকির ক্ষতি হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. আতিক উল্লাহ সওদাগর বলেন, এ ঘটনায় তারা বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে রয়েছেন। সড়ক অবরোধ থাকায় চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া কাঁচা মাছের দুটি ট্রাক প্রায় ৬ ঘণ্টা আটকা পড়ে। এতে মাছগুলো পচে সাত থেকে আট লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়াও মাছ পরিবহণের আরও দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে কোটি টাকার লোকসান গুণতে হবে।

এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ওই বিরোধ কোনোভাবেই শেষ হতে দিচ্ছে না স্থানীয় একটি কুচক্রী মহল। এতে লোকজনের পাশাপাশি বিরাট হুমকির মুখে শুঁটকি মহাল। এ অবস্থায় আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাই।

এ বিষয়ে জানতে কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামানের মোবাইল নম্বরে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সারাবাংলা/টিআর

কক্সবাজার কুতুবদিয়া পাড়া নাজিরাটেক শুঁটকি মহাল শুঁটকি মহাল সংঘর্ষ সমিতিপাড়া

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর