Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঘিওরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২০:১২

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খান। ছবি: সংগৃহীত

মানিকগঞ্জ: এক কোটি ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা আত্মসাৎসহ শিক্ষকদের হয়রানি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে মানিকগঞ্জ ঘিওর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খানের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ অভিযোগ করেছেন তার বিরুদ্ধে। ১২ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ১৫টি অভিযোগে আনা হয়েছে।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি মো. রফিকুল ইসলাম, আতিকুজ্জামান ও খায়রুন নাহার খন্দকার ওই অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন ইউএনওর কাছে। ইউএনও অভিযোগপত্র পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে ব্যবস্থঅ নেওয়া হবে।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এসএসসি ও জেএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ বাবদ ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খান। ১২ বছর ধরে মালামাল না কিনে ভুয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। বিদ্যালয়ে উত্তীর্ণ নিয়োগপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র আটকে উন্নয়নের কথা বলে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। মার্কশিট, সার্টিফিকেট ও প্রশাংসাপত্র বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে সাত লাখ ২০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, গত আট বছরে বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের স্কুল বেতনের ২০ শতাংশ প্রভিডেন্ট ফান্ড কেটে ব্যাংকে জমা না করে ১৪ লাখ ৮৫ হাজার ১২০ টাকা আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক। সম্প্রতি বিজ্ঞানবিষয়ক মালামাল কেনার জন্য সরকারের বরাদ্দ থাকলেও সেগুলো না কিনে ওই বরাদ্দ তিনি আত্মসাৎ করেন। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের জমি লিজ দেওয়ায় অনিয়ম, বিদ্যালয়ে দোকানের জমানত আত্মসাৎ ও দোকানের ভাড়া আদায়ের অনিয়মের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শুধু তাই নয়, বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ, চার্জার ফ্যান, সিসি ক্যামেরা প্রধান শিক্ষক তার বাসায় নিয়ে ব্যবহার করে থাকেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগে। বলা হয়েছে, উলটো বিদ্যালয়ের টাকায় নিজের জন্য একাধিক মোবাইল সেট কিনেছেন তিনি। শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাচারিতা ও হয়রানির করা এবং শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেল পাওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের নামে টাকা আদায় ও ক্লাস চালকালীন শিক্ষার্থীদের জোর করে প্রাইভেট পড়ানো, রাতের বেলায় বহিরাগতদের নিয়ে আড্ডা দেওয়ার মতো সব অভিযোগ রয়েছে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খানের বিরুদ্ধে।

অভিযোগকারী শিক্ষক প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছাড়া ২৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। এর মধ্যে সহকারী প্রধান শিক্ষক ছাড়া সবাই সই করেছেন ওই অভিযোগপত্রে। প্রায় তিন শ শিক্ষার্থীও তাতে সই করেছে। প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তার সবগুলো সত্য ও সেগুলোর প্রমাণ রয়েছে।

জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খান বলেন, যারা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা অভিযোগ তুলে নেবেন। মূলত আমাকে হয়রানি করার জন্যই একটি গোষ্ঠী মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছে।

ঘিওরের ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘিওর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ম্যানেজিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে অভিযোগ তদন্ত করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে।

সারাবাংলা/টিআর

অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রধান শিক্ষক মানিকগঞ্জ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর