যৌতুক না দেওয়ায় গায়ে আগুন, ৮ দিন পর মৃত্যু
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৪
নওগাঁ: নওগাঁয় যৌতুক না দেওয়ায় ফজিলাতুন নেছার (২৪) গায়ে আগুন দিয়েছিলেন তার স্বামী। কেরোসিনের সেই আগুনে দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করেছেন ফজিলাতুন নেছা। শেষ পর্যন্ত পেরে ওঠেননি তিনি। আট দিনের লড়াইয়ের মৃত্যুবরণ করেছেন।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। গত ২৭ আগস্ট সকালে নওগাঁ সদর উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামে স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন তিনি।
ফজিলাতুন নেছা সদর উপজেলার কোমইগাড়ী সাকিদার পাড়ার ফজলুর হোসেনের মেয়ে। একই উপজেলার ভবানীপুর মধ্যেপাড়া গ্রামের আতোয়ার রহমানের ছেলে গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, পারিবারিকভাবে চার বছর আগে গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে বিয়ে হয় ফজিলাতুন নেছার। এর কিছুদিন পরই বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রাব্বানী। ফজিলাতুন নেছা জানতে পারলে স্বামীকে এ ধরনের সম্পর্কে জড়াতে নিষেধ করেন। এ সময় রাব্বানী তার কাছে সাড়ে তিন লাখ টাকা যৌতুক চান। ওই সময় থেকেই স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন রাব্বানী ও তার পরিবারের সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত ২৭ আগস্ট সকালে ফের ফজিলাতুন নেছাকে বলা হয় যৌতুকের টাকা নিয়ে আসতে। তিনি অস্বীকৃতি জানালে রাব্বানী তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে ফজিলাতুন নেছা জ্ঞান হারালে রাব্বানী তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় ফজিলাতুন নেছার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা হাজির হয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। নওগাঁ সদর হাসপাতাল থেকে তাকে প্রথমে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেলেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ফজিলাতুন নেছা।
এদিকে এ ঘটনায় ফজিলাতুন নেছার বাবা ফজলুর হোসেন বাদী হয়ে গোলাম রাব্বানীসহ তার পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় পুলিশ ফজিলাতুন নেছার স্বামী গোলাম রাব্বানীকে গ্রেফতার করেছে।
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনাটি শুনেছি। এ ঘটনায় থানায় মামলা থাকায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু ওই গৃহবধূ মারা গেছেন, এ জন্য থানায় দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হয়ে যাবে। তদন্তসাপেক্ষে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সারাবংলা/টিআর