হল থেকে শিক্ষার্থীকে বের করে কক্ষ দখলে অভিযুক্ত জবি ছাত্রদল নেতা
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:০৮
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শহিদ নজরুল ইসলাম আবাসিক হলের একটি কক্ষ থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বের করে দিয়ে কক্ষটি দখলে নিয়ে তালা দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। বাকি কক্ষগুলোও দখলে নেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে জবি ছাত্রদলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে শহিদ নজরুল ইসলাম হলের ১০৪ নম্বর কক্ষেটি দখলে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আওয়ামী সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ নজরুল ইসলাম ছাত্রাবাসে অবস্থানরত জবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী নিজেদের অর্থ ব্যয় করে হলটি বসবাসযোগ্য করে তোলেন। তারাই থাকছিলেন সেখানে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের পর জবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা গ্রুপের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের নজরুল হলের ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় শাখা ছাত্রদলের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রায়হান হোসেন অপুর নেতৃত্বে সহসাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুর রহমান দুর্জয়, মাশফিকুর রাইন ও মনিরুজ্জামান, ১১ ব্যাচের শামীম, নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৭ ব্যাচের মাহমুদুল হাসান নাইম, বাংলা বিভাগের ১৮ ব্যাচের আশরাফুল, ১৭ ব্যাচের ফাইন্যান্স বিভাগের সৈকত মাহমুদসহ ১৫-২০ জন নেতাকর্মী হল দখল করেন। পরে ১০৪ নম্বর কক্ষটি দখলে নিয়ে তালা দেন। বাকি কক্ষগুলোও ছাত্রদল দখল করবে বলে তারা অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের হুমকি দেন। হলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাইরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো ঠাঁই নেই বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
অভিযোগ মিলেছে, কক্ষ দখলের সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ১০৪ নম্বর কক্ষ থেকে ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের হাফিজুর রহমানকে হল থেকে জিনিসপত্রসহ বের করে দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান বলেন, তারা এত বেশি আক্রমণাত্মক ছিল যে ঠান্ডা মাথায় কথা বলার পরিবেশ ছিল না। আমি সিনিয়র হলেও তারা জুনিয়র হয়ে আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বই খাতা বাইরে ফেলে দেয়, টেবিল-চৌকি বাইরে বের করে দেয়।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রায়হান হোসেন অপু বলেন, রুম ফাঁকা ছিল, ওখানে কেউই ছিল না। এ জন্য কয়েকজনকে তুলে দিয়েছি। রুম থেকে কাউকে বের করে দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। বাকি সব অভিযোগ মিথ্যা।
শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য নেই। মাত্র ফেসবুকে এমন একটি পোস্ট দেখলাম। তবে শুনেছি, ওখানে একজন ছাত্রদলের পরিচয় দিয়ে হল নিয়ন্ত্রণ করে। এখন যদি আসলেই ছাত্রদলের কেউ এমন করে থাকে, আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।
৫ আগস্ট সরকার পতনের পরের কয়েক দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থেকে শুরু করে প্রক্টর, সহকারী প্রক্টর এবং হলের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও সবাই পদত্যাগ করেছেন। এ অবস্থায় এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সারাবাংলা/টিআর
ছাত্রদল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় জবি ছাত্রদল শহিদ নজরুল ইসলাম হল হল দখল