কবর থেকে তোলা হলো আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত মেরাজুলের মরদেহ
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:০৪
রংপুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে পুলিশের গুলিতে নিহত যুবক মেরাজুল ইসলামের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ৫৪ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহ উত্তোলনের পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়া কবরস্থান থেকে মরদেহ তোলা হয়।
মরদেহ উত্তোলনের সময় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল ইসলাম, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত মেরাজুল (৩৫) জুম্মাপাড়া এলাকার শামসুল হক-আম্বিয়া বেগম দম্পতির সন্তান। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। মেরাজুল সিটি বাজার এলাকায় ফল বিক্রি করতেন।
মেরাজুল নিহতের গত ১৮ আগস্ট তার মা আম্বিয়া বেগম বাদী হয়ে মামলা করেন। পরবর্তীতে ২৫ আগস্ট তার স্ত্রী নাজমিম ইসলাম বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন।
দুই মামলায় আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, রংপুর রেঞ্জের সাবেক ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল, সহকারী পুলিশ কমিশনার ইমরান হোসেন, আরিফুজ্জামান আরিফ, জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান, আবু আশরাফ সিদ্দিক, নজরুল ইসলাম, পুলিশ পরিদর্শক আতাউর রহমান, আব্দুর রশিদ প্রামাণিকসহ জেলা পুলিশের দেড়শ পুলিশ সদস্য ও অজ্ঞাত আসামি রয়েছে।
এছাড়া রংপুর সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর রফিকুল ইসলাম, শাহাদত হোসেন, হারুন-অর-রশিদ, জাহাঙ্গীর আলম তোতা, শাহাজাদা আরমান, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক রমজান আলী তুহিন, জেলা যুবলীগের সভাপতি লক্ষ্মীণ চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি, যুবলীগ নেতা মামুনুর রশীদ ওরফে নোংরা মামুন, আওয়ামী লীগ নেতা নবী উল্লাহ পান্না, যুবলীগ কর্মী ডিজেল আহমেদ, সাবেক সংসদ সদস্য নাছিমা জামান ববি, মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মুরাদ হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডলকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল সিটি করপোরেশনের ফুটওভার ব্রিজের কাছে আসে। এ সময় আসামিরা অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনিভাবে মিছিলে বাধা দেয়। মিছিলটি এগিয়ে যেতে থাকলে রংপুর পুলিশ সুপার সতর্ক না করে পুলিশের এপিসিতে উঠে গুলি ও ইটপাটকেল ছোড়ার নির্দেশ দেন। এ সময় আসামিরা তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ও ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে মেরাজুল ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। কিছুক্ষণের মধ্যে তিনি মারা যান।
সারাবাংলা/ইআ