Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চট্টগ্রামে বৃষ্টিপাত, পাহাড়ধসের শঙ্কা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় হওয়ায় চট্টগ্রামে বৃষ্টি বেড়েছে। বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ধসের শঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম অঞ্চলের জেলাগুলোতে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে চট্টগ্রামে বৃষ্টি বাড়ায় কিছু কিছু নিচু এলাকায় হালকা পানি উঠেছে। তবে এতে জনজীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেনি।

চট্টগ্রাম পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা আবদুল বারেক সারাবাংলাকে জানান, শুক্রবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে, বেলা ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অর্থাৎ এদিন বেলা ১২টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। মূলত শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে বৃষ্টি বেড়েছে। বৃষ্টি শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাত পর্যন্ত হওয়ার পূর্বাভাস আছে। চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পতেঙ্গা আবহাওয়ার অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকা ও তার আশপাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সতর্ক সংকেতের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম নগরী বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ধসের শঙ্কা আছে।

বিজ্ঞাপন

পাহাড়ধসের আশঙ্কায় নগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোয় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে সতর্ক করা হচ্ছে। পাহাড়ের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করা হচ্ছে।

পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির হিসেবে চট্টগ্রাম নগরের ২৬ পাহাড়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৫৫৮টি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বসতি রয়েছে নগরীর কাট্টলী ভূমি সার্কেলে। আকবরশাহ থানাধীন ১, ২ ও ৩ নম্বর ঝিলসংলগ্ন পাহাড়গুলো এ সার্কেলের অন্তর্ভুক্ত। এখানেই বেশি পরিবারের বসবাস। কিন্তু পাহাড়ধসের ঝুঁকি মাথায় নিয়েই পরিবারগুলো ওখানে বসবাস করছে।

কাট্টলী ভূমি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরাফাত সিদ্দিকী সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসকারীদের সতর্ক করতে ওইসব এলাকার জনপ্রতিনিধিদের বলা হয়েছে৷ নিরাপদে সরে যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। তবে কেউ এখনও সরেননি।’

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে এখন অবৈধ বসতির সংখ্যা ৬ হাজার ১৭৫ পরিবার। মোট ঝুঁকিপূর্ণ বসতিসম্পন্ন পাহাড় আছে ২৬টি। চট্টগ্রাম নগরী এবং আশপাশের এলাকায় পাহাড়ধসে প্রতিবছরই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।

গত ১৬ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে তিনশ’রও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ২০০৭ সালের ১১ জন পাহাড়ধসে চট্টগ্রাম নগরীতে ১২৭ জনের মৃত্যুর হয়েছিল। এ ঘটনায় পাহাড়ে অবৈধ বসতি, ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস এবং প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর থেকে প্রায় প্রতিবছরই পাহাড়ধসে নগরী ও জেলায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে নগরীর আকবর শাহ এলাকায় পাহাড়ধসে একই পরিবারের দু’জনের মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আইসি/এমও

পাহাড়ধস পাহাড়ধসের শঙ্কা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর