Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শরৎ নাকি বর্ষা! বোঝার জো নেই, হেমন্তে আসছে ঝড়

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৭

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সারাবাংলা ফাইল ছবি

ঢাকা: আকাশ ঢেকে আছে কালো মেঘে। দমকা হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থেমে থেমে চমকাচ্ছে বিদ্যুৎ। সেইসঙ্গে অঝোরে ঝড়ছে বৃষ্টি। হিম হিম ঠান্ডা অনুভব। বাইরে পা বাড়ানোর সুযোগ নেই বললেই চলে। প্রকৃতির এই চিত্র দেখে মনে হচ্ছে, এখন যেন বর্ষাকাল। কিন্তু ঋতুতে চলছে শরতকাল। সাগরে গভীর নিম্মচাপের কারণে শুভ্র শরতকে আক্রমণ করেছে বর্ষা। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া বর্ষা অবিরাম ঝরে যাচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি থাকতে পারে অন্তত আরও ২৪ ঘণ্টা। এদিকে, সংস্থাটির ত্রৈমাসিক আবহাওয়ার পূর্বাভাস আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা করছে। তবে চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়ের কোনো সম্ভাবনা নেই জানিয়ে দু’টি লঘুচাপের আভাস দিয়েছে সংস্থাটি। যদিও প্রকৃতির এই পরিবর্তনকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হিসেবেই দেখছেন আবহাওয়াবিদরা।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়ার বর্তমান পরিস্থিতি

গত ২৪ ঘণ্টায় বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্মচাপের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে দফায় দফায় অগ্রগতি জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর। গত দুই দিনে আবহাওয়ার পাঁচটি বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সর্বশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত স্থল নিম্নচাপটি সামান্য উত্তরপশ্চিম দিকে গিয়ে ঘণীভূত হয়ে শনিবার সকাল ৯ টায় একই এলাকায় গভীর স্থল নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে।

এর ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সমুদ্র বন্দরসগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে তিন নম্বর (পুন.) তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। যে কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, রাজধানী ঢাকায় সারাদিন বৃষ্টি ঝরছে। শুক্রবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি শনিবার রাতেও ঝরে যাচ্ছিল। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সাগরে নিম্মচাপের কারণে সারাদেশে দমকা হাওয়াসহ ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে।

অক্টোবর-নভেম্বরে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা

আবহাওয়ার ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে একটি ঘুর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বরে দুই থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। অক্টোবরেও দু’টি লঘুচাপের পূর্বাভাস রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে সামগ্রিকভাবে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় বঙ্গোপসাগরে দুই থেকে পাঁচ লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে এক থেকে দু’টি মৌসুমি নিম্নচাপ ও একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশি থাকতে পারে। এ সময়ে দেশে ৫ থেকে ১০ দিন হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় হতে পারে। পাশাপাশি দেশে এক থেকে দু’টি বিচ্ছিন্নভাবে মৃদু ৩৬ থেকে ৩৮°সেলসিয়াস ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবী উষ্ণ হচ্ছে। তারই প্রভাব পড়েছে আবহাওয়ায়। যে কারণে বাংলাদেশের ঋতুচক্রে পরিবর্তন আসছে।’ তিনি বলেন, ‘বর্ষাকাল বিদায় নিলেও শরত, হেমন্ত এমনকি শীতেও বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়। গতবছরও এমন বৃষ্টিপাত ছিল।’

এদিকে, সকাল থেকেই রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছে। কোথাও কোথাও রাস্তায় পানি উঠে গেছে। ফলে শনিবার যাদের অফিস করতে হয়ে তারা পড়েছেন বিড়ম্বনায়। এদিন গণপরিবহনের সংখ্যা কম থাকলেও জলজটে ভোগান্তি পোহাতে হয় যাত্রীদের। গত রাতেও বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু দিনের বৃষ্টিতে কর্মজীবীদের পাশাপাশি অন্যান্য মানুষদের সমস্যায় পড়তে হয়।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

ঝড় বর্ষা বোঝার জো নেই শরৎ হেমন্ত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর