ইউনিয়ন কেন্দ্রে প্রসবের হার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ
৫ জুন ২০১৮ ২১:৫৩
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র বিশেষ করে ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দুর্গম ও সুবিধাবঞ্চিত জনপদের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি ঘটানো সম্ভব। ইউএসএইডের মামনি হেলথ সিস্টেম স্ট্রেনদেনিং (মামনিএইচএসএস) প্রকল্পের অভিজ্ঞতা থেকে এ ফলাফল পাওয়া গেছে।
সোমবার (৪ জুন) সরকারি খাতের স্বাস্থ্যকেন্দ্র শক্তিশালী করার মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী বৃদ্ধি’ শীর্ষক এক অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় এই বিষয়টি ভাবে উঠে আসে। স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর ঢাকায় এই সভার আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসবের হার প্রায় তিনগুন বেড়েছে প্রকল্পের চার জেলায়। তিন বছরে চার জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে ১৫ হাজার পাঁচ শ’র বেশি স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হয়।
২০১৪ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য ছিলো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রগুলোকে সমূহকে এমনভাবে প্রস্তুত করা যেন তারা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা মানসম্পন্ন প্রসব পূর্ব, প্রসব কালীন ও প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদান করতে পারে । প্রকল্পের চিফ অব পার্টি জবি জর্জ ব্যাখ্যা করেন কীভাবে (মামনি এইচএসএস) নোয়াখালী, লক্ষীপুর, হবিগঞ্জ, ঝালোকাঠিতে সেই লক্ষ্য অর্জন করে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, মামণির উদ্যোগে স্থানীয় সরকার, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ ও স্থানীয় কমিউনিটি সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উন্নয়নে এগিয়ে আসে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নানা ঘাটতি (যেমন আয়া নিয়োগ, ঔষধ, আসবাপত্র ক্রয়) মেটাতে স্থানীয় সরকার অর্থ বরাদ্দ করে এবং নিবিড় তদারকির মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চত করে তারা। অন্যদিকে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ প্রয়োজন মাফিক লোকবল নিয়োগ দিয়ে, কখনো বা অবকাঠামো সারিয়ে তুলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে সেবা প্রদানের জন্য তৈরি করেছে। এই প্রক্রিয়ায় গত দুই বছরে ১০০ এর অধিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ২৪/৭ সেবা কেন্দ্রে উন্নীত হয়েছে ।
আর এসব সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসবের হার প্রায় তিনগুণ বেড়েছে উল্লেখিত চার জেলায়। তিন বছরে চার জেলার ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলোতে ১৫ হাজার পাঁচ শ‘র বেশি স্বাভাবিক প্রসব সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে অব্যাহতভাবে স্বাস্থ্য সেবার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিশেষ করে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য-এর পরিধি বাড়ানোর বিষয়টি সরকার অগ্রাধিকার দিচ্ছে, মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার এখনও শতকরা ৪০ ভাগ। এই অনুপাত আরও বাড়ানোর জন্য দক্ষ জনশক্তিসহ অন্যান্য উপকরণ প্রয়োজন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. কাজী মুস্তাফা সারোয়ার বলেন, এটা আশার কথা যে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রসবের হার বাড়ছে। একইসঙ্গে জীবন রক্ষাকারী মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা ও প্রসব সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বিশেষ করে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সমূহের গুরুত্বের উপর জোর দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, সেভ দ্যা চিলড্রেনের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. সৈয়দ ইশতিয়াক মান্নানসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
সারাবাংলা/জেএ/এমআই