অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কিত হলে নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে: সাইফুল হক
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:০০ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৫১
ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কিত হলে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার কাজ সম্পর্কে অস্পষ্টতার পাশাপাশি সমন্বয়হীনতাও দেখা যাচ্ছে। আত্মবিশ্বাসেরও ঘাটতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার যাতে বিশেষ কোনো স্বার্থান্বেষীদের কাছে কোনোভাবে জিম্মি না হয়ে পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসনে যে অস্থিরতা চলছে অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির দুই শহীদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফ স্মরণে রাজধানীর সেগুন বাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিউতে ‘রক্তেভেজা গণঅভ্যুত্থান- গণআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সাইফুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে নানা উসকানি, অনৈতিক চাপ ও প্রভাব মোকাবিলা করে তার নিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বিতর্কিত হলে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।
এসময় তিনি আশু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার উদ্যোগের পাশাপাশি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিতেও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়াকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসাবে দেখে এটাকে পরিস্থিতি সামাল দিতে এন্টিবায়োটিক ব্যবস্থা হিসাবে আখ্যায়িত করেন। তিনি আশা করেন জনআস্থা ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করবেন।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান একদিনে সংগঠিত হয়নি; এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক দলসমূহ ও জনগণের বহুবছরের মরণপন লড়াই সংগ্রাম। এবারকার ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম ষোলবছর ও ছত্রিশ দিনের। হঠাৎ কোনো ঘটনা সংগঠিত হয়নি।
তিনি বলেন, আমরা বর্তমান সরকারকে সহযোগিতা করতে চাই।কিন্তু সরকারকে তাদের ক্ষমতা ও এখতিয়ার সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। আমরা আশা করি রাজনৈতিক দল ও জনগণ আস্থায় নিয়ে সরকার সফল হবে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক সোহরাব হাসান বলেন, অতীতে কয়েকবার স্বৈরতন্ত্রের পতন হয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র আসেনি, জনগণের মুক্তি হয়নি। এবার সবাইকে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভদ্রোচিত অনেকগুলো কমিশন হয়েছে, কিন্তু শ্রমজীবী মেহনতিদের অধিকার নিয়ে কোনো কমিশন হয়নি।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে দুর্বৃত্ত মাফিয়া রাজনীতিতে ফিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে দেশবাসীকে পাহারায় থাকার আহ্বান জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, সাংবাদিক ও লেখক সোহরাব হাসান, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়েজুল হাকিম, এবি পার্টির আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব ড.আবু ইউসুফ সেলিম, নাগরিক ঐক্য এর সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি আবদুন নূর, ডেমোক্রেটিক পিপলস পার্টির সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভায় শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনইউ