ঢাবির হলে চোর সন্দেহে যুবককে ‘পিটিয়ে হত্যা’
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৬
ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন (৩২) নামের এক যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে হলের গেস্টরুমে এ ঘটনা ঘটে। পরে শিক্ষার্থীরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, শিক্ষার্থীরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই যুবককে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তবে তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শিক্ষার্থীদের আর পাওয়া যায়নি। মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি শাহবাগ থানায় জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার ১২টার দিকে ওই যুবককে চোর সন্দেহে আটক করে শিক্ষার্থীরা। এরপর তাকে মারধর করে। অসুস্থ হয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরাই মধ্যরাতে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
নিহত তোফাজ্জল হোসেনের বন্ধু মো. বেলাল গাজী জানান, তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার তালুকচর দোয়ানি গ্রামে। বাবার নাম আব্দুর রহমান। বরিশাল বিএম কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছে। তবে ৩-৪ বছর ধরে তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এরপর থেকে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ভবঘুরে জীবনযাপন করতেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশেও থাকতেন।
এদিকে এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সকালে ঘটনাটি শোনার পর আমি প্রক্টরিয়াল টিম নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখানে মর্গে থাকা ব্যক্তি মৃত্যুর ঘটনা জানিয়েছে। টিমের একজন শাহবাগ থানায় মামলা করার জন্য গিয়েছেন।’
অধ্যাপক সাইফুদ্দিন বলেন, ‘আমি হলটির প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য বলেছি। সেগুলো দেখে কারা দোষী, তা শনাক্ত করা হবে। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা বিষয়টাকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি।’
এ ঘটনা তদন্তে একজন সহকারী প্রক্টরসহ সর্বমোট সাতজনের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
কমিটির সদস্যরা হলেন—সহকারী প্রক্টর (বিজ্ঞান অনুষদ) এ. কে. এম. নূর আলম সিদ্দিকী এবং ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীর, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান, মো. মাহাবুব আলম, ড. আছিব আহমেদ ও ড. এম এম তৌহিদল ইসলাম।
ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম স্বাক্ষরিত তদন্ত কমিটি সংক্রান্ত ওই নোটিশে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এই বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়েছে তাদের।
সারাবাংলা/এসএসআর/আরআইআর/ইআ