চট্টগ্রাম অঞ্চলে সহজ হলো ভোটার নিবন্ধন, কমবে ভোগান্তি
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২১ | আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৯
রাঙ্গামাটি: গত সাত বছরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। বিভিন্ন সময় অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশের নিবন্ধন ও নাগরিকত্ব নিয়ে তাদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট পর্যন্ত নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ কারণে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভোটার নিবন্ধন নিয়ে বাড়তি ‘কড়াকড়ি’ আরোপ করতে বাধ্য হয়েছিল নির্বাচন কমিশন। অবশেষে সেই ‘কড়াকড়ি’ প্রক্রিয়াকে কমিশন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়া আগের তুলনায় সহজ করা হয়েছে। এতে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও চট্টগ্রাম জেলায় নতুন ভোটার নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় জটিলতা কমবে। ভোগান্তি নিরসন হবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলার ৫০টি উপজেলার মানুষের।
চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ভোটার নিবন্ধনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের বাইরেও আনুষঙ্গিক নানা কাগজপত্র জমা দেওয়া ছিল বাধ্যতামূলক। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ভোগান্তিতে ছিলেন স্থানীয়রা। অনেকেই কাগজপত্রের জটিলতার কারণে ভোটার হতেও পারেননি। এবার ভোটার নিবন্ধন সহজ করায় ভোগান্তি কমে আসবে চট্টগ্রাম অঞ্চলে— এমনটিই আশাবাদ সংশ্লিষ্টদের।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বিশেষ এলাকায় বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা ও ভিনদেশি নাগরিকরা যেন ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারেন এবং প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রম যেন সহজ হয়, সে লক্ষ্যে গত ২১ আগস্ট এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।’
ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানকে ‘বিশেষ এলাকা’ ঘোষণা করা হয়। আর এই বিশেষ এলাকাগুলোতে ভোটার নিবন্ধনে জন্য নাগরিকদের তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়ছে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, ‘এ’ ক্যাটাগরি বা প্রক্রিয়াতে কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন জন্ম নিবন্ধন ও নাগরিক সনদপত্র, মা-বাবার পরিচয়পত্র ও এসএসসি সনদপত্র হলেই ভোটার হওয়া যাবে। যাদের এসএসসি সনদ নেই, তারা ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ভোটার হতে পারবেন। বাড়তি তথ্য হিসেবে তাদের প্রয়োজন হবে মা-বাবার আঙুলের ছাপ।
‘এ’ ও ‘বি’— কোনো ক্যাটাগরির জন্যই প্রয়োজনীয় তথ্য বা কাগজপত্র যাদের থাকবে না, তারা বিশেষ ক্যাটাগরির মাধ্যমে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ার সুযোগ পাবেন।
রাঙ্গামাটির সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম সারাবাংলাকে জানান, রোহিঙ্গা নাগরিকদের কারণে এ অঞ্চলের বাংলাদেশি নাগরিকদেরও নতুন ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এ ভোগান্তি লাগবেই নতুন উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শিক্ষা সনদ ও সরকারি চাকরিজীবীর সন্তান বিবেচনায় তিন ক্যাটাগরি বা প্রক্রিয়ায় ভোটার নিবন্ধন করা হবে। আশা করা যায় এখন স্থানীয়রা আগের তুলনায় অনেক সহজে এই সেবা নিতে পারবেন।
কারও জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) ভুল থাকলে সংশোধন করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে নুরুল আলম বলেন, কারও কারও এনআইডিতে ভুল আছে। এমন থাকলে সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু অনেকেই এনআইডির ভুল সংশোধন না করে দ্বিতীয়বার ভোটার নিবন্ধন করতে চান। কিন্তু তথ্য গোপন করে দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়া বা নিবন্ধন নেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। এনআইডি ভুল থাকলে দ্বিতীয়বার ভোটার না হয়ে সংশোধন করে নিতে হবে।
সারাবাংলা/টিআর
অবৈধভাবে নিবন্ধন ইসি চট্টগ্রাম অঞ্চল জাতীয় পরিচয়পত্র নির্বাচন কমিশন ভোটার নিবন্ধন রোহিঙ্গা