বিচার বিভাগ থেকে যেন কোনো অবিচার না হয়: আইন উপদেষ্টা
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:০২
ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, বিচার বিভাগ ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিচার বিভাগ থেকে অনেক অবিচার হয়েছে। বিচার বিভাগ থেকে যেন আর কোনো অবিচার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে নিম্ন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশ্যে প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, এমন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে যেখানে মানুষ ন্যায় বিচার পায়। গায়েবি মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি এই অন্তর্বর্তী সরকার সমর্থন করে না। আমরা ঢালাও মামলা, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মানুষকে হয়রানি করা, মানুষের জীবন জীবিকাকে নিশ্চিহ্ন করা, মানুষের ক্রমাগত ক্ষত, ক্রোধ, কোন্দল সৃষ্টি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে চাই। এক্ষেত্রে বিচারকদের দেখতে হবে অযথা নাগরিকরা যেন হয়রানি না হয়।
হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকদের উদ্দেশ্যে ড. আসিফ নজরুল বলেন, বিচারপতিদের কাছে মানুষ বিচার চাইতে আসে। তারা বিব্রতবোধ করেন। কেন বিব্রতবোধ করেন আপনি? বিব্রতবোধ করবেন যখন আপনার ভাই বোন বিচার চাইতে আসে। বিচারপ্রার্থী মানুষ কোথাও বিচার না পেয়ে আপনার কাছে এসেছে। আপনি কিভাবে বিব্রতবোধ করেন?
প্রধান উপদেষ্টার এক মামলা নিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, আপনারা বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের আর্জি গ্রহণ করতে বিব্রতবোধ করেছিলেন। কেন করেছিলেন। আপনার এটা দায়িত্ব না? আপনার এটা সাংবিধবানিক দায়িত্ব না? আপনি শুনে (শুনানি গ্রহণ করে) রিজেক্ট করে দেন। সমস্যা নেই। আপনি শুনবেনই না। আপনাদের সুনাম কিছু বিচারপতির কারণে ক্ষুণ্ন হয়েছে। এগুলি আর কইরেন না। মানুষ বোকা না। মানুষের বিচার বুদ্ধি আছে।
আদালতে বিচার প্রার্থী যাতে হামলার শিকার না হন সে আহ্বান জানিয়ে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ বলেন, আমাদের দেশের আইনে তো কোথাও নাই যে, বিচার প্রার্থী যারা আছেন তাকে আপনি হামলা করেন। তাই এগুলো না করে মানুষকে ভোগান্তি থেকে মুক্তি দেন।
অন্তবর্তী সরকার মেধা, যোগ্যতা ও সততাকে মূল্যায়ন করে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি নিয়োগ তার বড় প্রমাণ।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অভিভাষণ দেন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমদ ভূঞা।
অনুষ্ঠানে ছাত্র-জনতার আন্দলোনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এ ছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেন নওগাঁর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বিশ্বনাথ মন্ডল ও খুলনার জেলা ও দায়রা জজ মাহমুদা খাতুন।
অভিভাষণ অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রির কর্মকর্তা ও সারা দেশের প্রায় দুই হাজার বিচারক উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/ইউজে/কেআইএফ/এনইউ