রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারে ২ কমিটি
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৬
ঢাকা: বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও অন্যান্য নানা কারণে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করার জন্য সুপারিশ করতে জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুটি কমিটি গঠন করেছে সরকার।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এক পরিপত্রে এ দুই কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে।
জেলা পর্যায়ের কমিটিতে সভাপতি হিসেবে থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। সদস্য হিসেবে থাকবেন পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন উপকমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাগুলোর জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)। জেলা পর্যায়ের কমিটিতে সদস্যসচিব হবেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে। এ কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকবেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা), যুগ্মসচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্মসচিব পর্যায়ের নিচে নয়)। এ কমিটির সদস্যসচিব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার উপসচিব বা সিনিয়র সহকারী সচিব বা সহকারী সচিব।
জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে—
- রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে;
- আবেদনের সঙ্গে মামলার এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযোগপত্রের সার্টিফায়েড কপি দাখিল করতে হবে;
- আবেদন পাওয়ার সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনপত্রটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্র বিশেষে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন;
- আবেদন পাওয়ার ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠাবেন;
- পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন;
- জেলা কমিটির কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য দায়ের করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের নিকট সুপারিশ করবে; এবং
- জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ওই সুপারিশ, মামলার এজাহার, অভিযোগপত্রসহ আবেদন পাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী অন্যান্য তথ্যসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।
এদিকে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে—
- জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশ পাওয়ার পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সুপারিশগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করবে ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে;
- দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর অধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৮-এর ১০ (৪) ধারার বিধান অনুযায়ী কমিশনের লিখিত আদেশ ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না। এ কারণে এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে।
সারাবাংলা/টিআর
মামলা প্রত্যাহার রাজনৈতিক মামলা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়রানিমূলক মামলা