নদীকে দূষণ-দখল থেকে বাঁচাতে নির্দেশ যশোর জেলা প্রশাসনের
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:১২
যশোর: যশোর জেলায় ১৭টি নদী থাকলেও অবৈধ স্থাপনা, দখল ও দূষণে সেসব নদী বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নদীগুলোর বেহাল এ দশার পেছনে পরিবেশ অধিদফতরসহ প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করছেন বিশিষ্টজনেরা। এ পরিস্থিতিতে নদীগুলোকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাতে পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত যশোর নদী রক্ষা কমিটির বৈঠক থেকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন যশোরের নতুন জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম।
সভায় জানানো হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের নির্দেশনা অনুযায়ী খুব দ্রুতই যশোরের নদীর সংখ্যা, আয়তন ও বর্তমান অবস্থা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। দূষণ, দখল, অবৈধ স্থাপনা ও উচ্ছেদ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও থাকবে এর মধ্যে। নদী রক্ষায় যাবতীয় কার্যক্রমও গুরুত্বের সঙ্গে পরিচালনা করতে হবে।
সভায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, যশোর জেলায় নদীর সংখ্যা ১৭টি। এর অনেকগুলো পরিবেশ বিপর্যয়ের শিকার। এ সময় আলোচকরা বলেন, নদী দখল-দূষণের শিকার হওয়া ইস্যুতে পরিবেশ অধিদফতর একেবারেই নিশ্চুপ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রশাসনও নিষ্ক্রিয়। এর সুযোগ নিয়েই দখলদাররা অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলে নদী দখল করে নিচ্ছে। দিনের পর দিন নদী দূষণের শিকার হলেও কেউ কিছু বলছে না।
সভায় অংশগ্রহণকারী সদস্যরা বলেন, আগে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন নিজ উদ্যোগে নেটপাটা অপসারণ, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ, ঘের ব্যবসয়ীদের মাছ চাষসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর কার্যক্রম বন্ধ করে দিত। গত কয়েক বছর ধরে সেসব কার্যক্রম দৃশ্যমান নয়। বরং জেলা প্রশাসনের দোহাই দিয়ে অনেকে নদীতে বেড়িবাঁধ দিয়ে মাছের ঘের করার সুযোগ পেয়েছেন। এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও দখলদারদের উচ্ছেদের অনুরোধ জানান বক্তারা।
এসব বক্তব্য ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক নদী দখলদার, পরিবেশ বিপর্যয়কারী প্রতিষ্ঠান ও কলকারখানার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দেন পরিবেশ অধিদফতরকে। পাশাপাশি জরুরিভিত্তিতে তালিকা ও জরিপ করে নদীর দখলদারদের চিহ্নিত করা, নেটপাটা অপসারণ, অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করা ও সীমানা নির্ধারণসহ ১৯১৩ সালের নদী আইন বাস্তবায়নের জন্যও সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন।
সভায় সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা পরিবেশ অধিদফতরকে কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলেন জেলা প্রশাসক। এ ছাড়া অতীতে নদীর স্বাস্থ্য রক্ষায় পরিবেশ অধিদফতর কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তার বিবরণীও দাখিল করতে বলেছেন তিনি।
সভায় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুজন সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূর ই আলম সিদ্দিকী, যশোর প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএর প্রতিনিধি, আটটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/টিআর
অমিত্রাক্ষর সভাকক্ষ নদী রক্ষা কমিটি পরিবেশ অধিদফতর যশোর যশোর জেলা প্রশাসন